পিকাস নামে তিব্বতীয় মালভূমি অঞ্চলে একরকমের ইঁদুর শ্রেণির স্তন্যপায়ী আছে। এমনিতে যে ঘাস তিব্বতীয় পিকাস খায় ঐ ভয়ানক শীতে(তখন তাপমাত্রা -৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তা শুকিয়ে মড়মড়ে হয়ে যায়। কিন্তু তাহলে শীতকালে তিব্বতীয় পিকাসরা খায় কী? চলতি বছরের ১৯ শে জুলাই ‘প্রসেডিংস অফ দ্যা ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’ এ গবেষকরা জানিয়েছেন, পিকাসের একটি অদ্ভুত খাদ্যের কথা। শীতকালে তিব্বতীয় পিকাস ইয়াক বা চমরি গাই এর শুকনো মল খায় এবং তখন শীতের কারণে এরা বিপাক ক্রিয়ার হার ৩০ শতাংশ কমিয়ে ফেলে। পিকাসের পাকস্থলির ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে ইয়াকের মল তিব্বতীয় পিকাসের ক্ষেত্রে শীতের সধারণ খাদ্য।
অথচ উত্তর আমেরিকান পিকাস শীতকালে গর্তের মধ্যে জমানো ঘাস খায়। শীতকাল তিব্ববীয় পিকাসের জন্য শীতঘুমের উপযুক্ত সময় হতে পারতো। কিন্তু তাদের যাপন প্রনালী একেবারে ভিন্নরকম। গবেষকরা তিব্বতীয় পিকাসের শীতকালীন রুটিন কী সেটা জানার জন্যে চারটি দিকে ক্যামেরা বসিয়েছিলেন। গবেষণা দলের সদস্য স্কটল্যাণ্ডের আবার্ডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস্তুবিজ্ঞানী জন স্পীকম্যান বলেন, শীতকালে পিকাসের বিপাক ক্রিয়ায় অদ্ভুত বদল লক্ষ্য করা যায়। এবং লক্ষ্য করেন তারা শীতঘুমেও যাচ্ছে না। স্পীকম্যান ঐ শীতল পরিবেশ এবং পিকাসের শরীরের কার্যপ্রণালীর মধ্যে সংযোগসূত্রটা বুঝতে চান।
স্পীকম্যান ও তার সহযোগী দল ১৫৬ টি পিকাসকে নিয়ে পরিমাপ করে দেখেন ঠিক কতটা শক্তি (এনার্জি) গ্রীষ্ম ও শীতে তারা ব্যয় করে। ২৭টি পিকাসের দেহের সাথে তাপমাত্রা মাপার সেন্সার জুড়ে দেন গবেষকরা। শীতে জীবজন্তু বেশি শক্তি ব্যয় করে শরীর উষ্ণ রাখার জন্যে। কিন্তু তাজ্জব হয়ে গবেষকরা দেখেন পিকাসরা ঐ শীতে ২৯.৭ শতাংশ শক্তি কম ব্যবহার করছে। গ্রীষ্মের চেয়ে কম কাজ করছে। অথচ শীতঘুমে যাচ্ছে না। স্পীকম্যান অবশ্য জানিয়েছেন ইয়াকের মল খাবার জন্যে পিকাস শীতে একটু দুর্বল হয়ে পড়ে।