মাটি আবার স্মার্ট!

মাটি আবার স্মার্ট!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৩ জুলাই, ২০২৪
স্মার্ট-মাটি

গবেষকরা মাটিকে এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত করেছেন, যাতে মাটি তাতে গজিয়ে ওঠা গাছপালাকে আর্দ্র রাখবে আর তাদের অবিচ্ছিন্নভাবে পুষ্টি সরবরাহ করতে পারবে। এই স্মার্ট মাটির পেছনে অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি হাইড্রোজেল উপাদান রয়েছে। তারা পরীক্ষায় দেখেছেন, কম জল ও সার ব্যবহার করে হাইড্রোজেল মিশ্রিত মাটিতে নিয়মিত মাটির তুলনায় বৃহত্তর, স্বাস্থ্যকর উদ্ভিদ বেড়ে ওঠে। এর কারণ হল এই মাটি বাতাস থেকে জল শোষণ করতে পারে আর মাটিতে থাকা সার নিয়ন্ত্রিতভাবে গাছকে অবিরাম পুষ্টি জোগায়। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর জংজুন পার্ক বলেছেন, এই নতুন জেল প্রযুক্তি ঘন ঘন সেচ ও সারের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে কৃষকদের বোঝা কমাতে পারে। সবচেয়ে আশার কথা মাটির এই প্রযুক্তি শুষ্ক অঞ্চল থেকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ধরনের জলবায়ুর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
স্মার্ট মাটির ওপর এই গবেষণা এসিএস ম্যাটেরিয়ালস লেটারে প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষির চাহিদা বাড়ছে। আর চাষের জন্য ৭০% মিষ্টি জল তোলা উত্তোলন করা হচ্ছে, কিছু উন্নয়নশীল দেশে ৯৫% পর্যন্ত জল তোলা হয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা টেকসই খাদ্য উৎপাদন ও জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য দক্ষ সেচ ব্যবস্থা, জল সংরক্ষণ প্রযুক্তি গ্রহণ ও কম জলে চাষ করা যায় এমন ফসলের ওপর গুরুত্ব দিতে বলছেন। চিরাচরিত কৃষি পদ্ধতিতে, সেচ ও সারের জন্য অতিরিক্ত জল ব্যবহার ও পরিবেশগতভাবে জমির অবক্ষয় হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতায়, জলসম্পদ ক্রমবর্ধমানভাবে দুষ্প্রাপ্য হয়ে ওঠায় দক্ষ ও টেকসই সেচ অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা খুব বেড়ে গেছে। প্রচলিত সার ব্যবহারে অত্যধিক পুষ্টির এক্সপোজারে গাছের পুষ্টি গ্রহণের দক্ষতা হ্রাস পায়। তার সাথে সারের রাসায়নিক থেকে পরিবেশ দূষণ ও চাষযোগ্য জমির অবক্ষয় ঘটে। গবেষকদের আশা হাইড্রোজেল সমৃদ্ধ এই নতুন শ্রেণির মাটি আধুনিক টেকসই কৃষি পদ্ধতিতে জলের ঘাটতি ও দক্ষ পুষ্টি গ্রহণের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। তারা জানিয়েছেন তাদের গবেষণা মূলত ক্যালসিয়াম ভিত্তিক সারের ওপর করা হয়েছে, ভবিষ্যতে অন্যান্য সারের ওপরও তারা গবেষণা চালাবেন।