মানুষের আগ্রাসনে বিপন্ন ১০ কোটি বছরের মাছ!

মানুষের আগ্রাসনে বিপন্ন ১০ কোটি বছরের মাছ!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

দেখতে কুমিরের মত। মুখের চোয়ালেও সাজানো রয়েছে করাতের মত ধারালো দাঁতের সারি। কিন্তু তার কোনও পা নেই। বদলে শরীরে রয়েছে সাতটা পাখনা এবং আঁশের আস্তরণ। কুমিরের মত দেখতে হলেও প্রাণীটি একটি মাছ। নাম অ্যালিগেটর গার। ১০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে এই প্রাণীর আবির্ভাব হয়েছিল। বিবর্তন ও অভিযোজন সূত্রের উল্টোদিকে গিয়ে অপরিবর্তিতভাবে এই মৎস্য প্রজাতি টিকিয়ে রেখেছে তাদের অস্তিত্ব। তাই এই মাছের প্রজাতিকে প্রাণীবিজ্ঞানীরা বলেন জীবন্ত জীবাশ্ম বা লিভিং ফসিল।
সম্প্রতি ট্রান্সাকশান অফ আমেরিকান ফিশারিজ সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, এই মৎস প্রজাতিও অবলুপ্তির পথে। গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকা অন্যতম গবেষক, নিকোলস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও মৎস্যবিদ সলোমন ডেভিড জানিয়েছেন আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাবে এই বিরল মাছের প্রজাতি।
অ্যালিগাটর গার মূলত উত্তর আমেরিকার বাসিন্দা। মিসিসিপি নদীর নিম্ন ও মধ্য প্রবাহেই এই মাছের দেখা পাওয়া যায়। অন্যান্য ছোট মাছ ও কচ্ছপ, পাখি, উভচর প্রাণী, এমনকী জলজ স্তন্যপায়ী প্রাণীর মত নানা ধরণের সামুদ্রিক প্রাণীই এই মাছের খাদ্য। কিন্তু গত ৯ দশক ধরে এই বিরল প্রজাতির মাছ অবৈধভাবে শিকার করে যাচ্ছে মার্কিন মৎস্যজীবিরা। তার জন্য তারা তৈরি করেছিল বৈদ্যুতিন তার লাগানো বিশেষ ধরণের নৌকা। গারের গায়ে ওই নৌকার ছোঁয়া লাগলেই মারা যেত অ্যালিগেটর গার। পরবর্তীকালে মার্কিন সরকার আইন করে এই মাছের শিকার নিষিদ্ধ করলেও চোরাগোপ্তা শিকার ও হত্যাকাণ্ড বন্ধ হয়নি। স্লোমন ডেভিড বলছেন, কৃত্রিম প্রজননের সহায়তা ছাড়া এই মাছের প্রজাতিকে বাঁচানো খুব কঠিন।