মানুষের মতোই চাষাবাদে অভ্যস্ত এই স্তন্যপায়ী!

মানুষের মতোই চাষাবাদে অভ্যস্ত এই স্তন্যপায়ী!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌।
Posted on ২৮ জুলাই, ২০২২

কৃত্রিমভাবে খাদ্য উৎপাদনের কৃতিত্ব মানুষেরই ছিল। এবার জানা গিয়েছে, আরও একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী আছে যারা মানুষের মতই কৃষিকাজ জানে! সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এল এরকমই এক উত্তেজক তথ্য। প্রাণীটির নাম পকেট গোফার। বা জিওমিস পিনেটিস। ইঁদুর গোত্রের এই প্রাণীটি রীতিমতো কৃষিকাজে অভ্যস্ত। ফসল উৎপাদনের জন্য এদের পরিশ্রম চোখে পড়ার মত জানিয়েছেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এই প্রাণীটির আচরণ অন্যান্য মূষিক গোত্রের প্রাণীদের তুলনায় আলাদা। তারা মানুষের উপস্থিতি পছন্দ করে না। উৎপাত করে না কৃষিক্ষেত্রেও। আবার অন্যান্য ছোট প্রাণী শিকার করে নিজেদের খাদ্যের চাহিদাও মেটায় না! জীবনের অধিকাংশ সময়টাই তারা কাটায় মাটির নিচে তৈরি করা সুড়ঙ্গে। গোফারদের এই অদ্ভুত যাপনের রহস্য উদ্ঘাটন করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল গবেষকদের। তার অনুসন্ধানে নেমে গবেষকরা চমকে গিয়ে জানতে পারেন মাটির নিচে বসবাসের জন্য দীর্ঘ টানেল তৈরি করে গোফাররা। যার এক একটি প্রায় ১০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত! গবেষকদের আরও পর্যবেক্ষণ, এই টানেলগুলির মধ্যে প্রকারভেদ আছে। কিছু টানেলে শুধুমাত্র রাত্রিবাস করে এই প্রাণীগুলি। অন্যগুলি ব্যবহৃত হয় শুধুমাত্র খাদ্যের যোগান বজায় রাখতে। মূলত পাম গাছের শিকড়কে কেন্দ্র করেই এই টানেলগুলি নির্মাণ করে গোফাররা। ঘাস ছাড়া এই শিকড়ই নিরামিষাশী গোফারদের অন্যতম খাদ্য। পাম গাছের মূলই তাদের ৬০ শতাংশ খাদ্যের যোগান দেয় বলেই অভিমত গবেষকদের। কিন্তু শুধু টানেল তৈরির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই তাদের কর্মকাণ্ড। এইসব শিকড়কে অন্যান্য পোকা-মাকড়দের থেকে রক্ষা করতে যথেষ্ট পরিশ্রম করে গোফাররা। সারাদিন ধরে টানেলে টানেলে টহল চলে তাদের। পাশাপাশি পুরো শিকড়কে একবারে খেয়ে ফেলে না গফাররা। আংশিকভাবে খেয়ে রেখে দেয় সেগুলিকে। শিকড়গুলি যাতে পুনরায় বৃদ্ধি পেতে পারে, তার জন্যই এই বন্দোবস্ত। তবে গবেষকদের সবচেয়ে বেশি অবাক করে অন্য একটি বিষয়। এই আধ-খাওয়া শিকড়গুলির গোড়াতেই মূলত মল-মূত্র ত্যাগ করে গোফাররা। মল-মূত্র যে সারের কাজ করে, গাছের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে তা ভালোরকমই জানা আছে তাদের।