মানুষ হাড়ের গঠন, হাঁটা আর আর্থ্রাইটিস কী সম্পর্কিত?

মানুষ হাড়ের গঠন, হাঁটা আর আর্থ্রাইটিস কী সম্পর্কিত?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৭ জুলাই, ২০২৩

প্রাইমেট বা এপ থেকে আদিম মানব বিবর্তনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি প্রায় ৬ মিলিয়ন বছর আগে ঘটেছিল বলে মনে করা হয় যখন আমাদের পূর্বপুরুষরা দুই পায়ে হাঁটা শুরু করেছিল। বাইপেডাল লোকোমোশনে বা দুপায়ে ভর করে হাঁটা শুরু করার ফলে প্রাইমেটরা বিভিন্ন পরিবেশের সাথে আরও বেশি খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। এর জন্য তাদের হাত মুক্ত হয়েছে আর তারা হাতিয়ার ব্যবহার করা শুরু করে, এর থেকে তাদের জ্ঞানীয় বিকাশও ত্বরান্বিত হয়। এইভাবে ধীরে ধীরে পরিবর্তনের সাথে আধুনিক মানুষের বিকাশ ঘটে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এক রূপ deep learning এবং জিনোম-ওয়াইড অ্যাসোসিয়েশন স্টাডির সংমিশ্রণে , গবেষকরা প্রাইমেটদের পরিবর্তনের জন্য দায়ী জিনোমিক অঞ্চলের মানচিত্র তৈরি করতে পেরেছেন, যে জেনেটিক ক্রম কঙ্কালের হাড়ের গঠন পরিবর্তন করে সোজা হাঁটার দিকে পরিচালিত করেছে। জেনেটিক মানচিত্র থেকে বোঝা গেছে যে জীবাশ্ম রেকর্ড থেকে যে শারীরবৃত্তীয় রূপান্তর লক্ষ করা যায়, সেই শারীরবৃত্তীয় রূপান্তরের জন্য দায়ী জিনগুলো প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা বাছাই হয়েছে এবং তা আদিম মানুষকে বিবর্তনের সুবিধা দিয়েছে, যার ফলে মানুষ চারপায়ের বদলে দুপায়ে হাঁটতে সক্ষম হয়েছে।
এই গবেষণা অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি অ্যান্ড অফ স্ট্যাটিস্টিক্স অ্যান্ড ডেটা সায়েন্সেস -এর সহকারী অধ্যাপক ভগীশ এম. নরসিমহান, পিএইচডি সহ-নেতৃত্বে হয়েছে, এবং এই ফলাফল ২১ জুলাই সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে।
আরও গভীরে গিয়ে গবেষকরা জেনেটিক বৈচিত্র এবং কঙ্কালের হাড়ের বৈশিষ্ট্য সনাক্ত করেছেন যা নিতম্ব, হাঁটু এবং পিঠের আর্থ্রাইটিসের বা বাতের সাথে যুক্ত, জানিয়েছেন তারজিন্দর সিং, পিএইচডি, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি ভ্যাগেলোস কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জন-এর কম্পিউটেশনাল এবং স্ট্যাটিস্টিক্যাল জিনোমিক্সের (সাইকিয়াট্রিতে) সহকারী অধ্যাপক এবং গবেষণার একজন সহ লেখক।
উদাহরণস্বরূপ, গড় নিতম্বের প্রস্থ ও উচ্চতার অনুপাতে সামান্য বিচ্যুতি ঘটলে হিপ অস্টিওআর্থারাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে। আবার টিবিয়া ফেমারের কোণের মধ্যে সামান্য বিচ্যুতি হাঁটুর অস্টিওআর্থারাইটিসের ঝুঁকির সাথে যুক্ত। এই বিষয়ে আরো গভীরে জানলে এই দুর্বল অবস্থাগুলো প্রতিরোধ এবং চিকিত্সা করার জন্য নতুন উপায় বের করতে গবেষকদের সহায়তা হতে পারে। এই গবেষণা মানব স্বাস্থ্য এবং রোগ বুঝতে সাহায্য করার জন্য বড়ো আকারের বায়োব্যাঙ্ক ডেটা, মেশিন লার্নিং এবং জিনোমিক্সকে একত্রিত করার প্রয়াস করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 1 =