মাস্ক তৈরিতে সূর্যতাপ

মাস্ক তৈরিতে সূর্যতাপ

অর্পণ নস্কর
Posted on ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রে সূর্যবিজ্ঞান নামে একটি পারিভাষিক শব্দ রয়েছে। সে আজগুবি শাস্ত্র অনুসারে নাকি নোংরা, কালি ছোপ লাগা কাপড় সূর্যের সামনে মেলে ধরলেই পরিশ্রুত হয়ে যায়। কিন্তু সত্যিই কি সূর্যালোকের পরিশ্রুত করার ক্ষমতা রয়েছে?
ধুলো ময়লা হয়তো ধুতে পারে না সূর্যালোক কিন্ত নির্দিষ্ট মাত্রার সূক্ষ্ম কাপড়ের অণুজীবাণু ধুয়ে দিতে পারে সূর্যালোকের তাপ। এবং এই বিজ্ঞানকেই কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি আইআইটি মান্ডির অধ্যাপক অমিত জয়সওয়াল এবং তাঁর গবেষক দল প্রস্তুত করেছেন করোনা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ারোধী স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পরিশ্রুত এমন একটি অতিক্ষুদ্র উপাদান যা ফেস মাস্ক তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই মাস্ক পুনর্ব্যবহারযোগ্য। অমিতবাবুরা যে উপাদান ব্যবহার করেছেন তা আসলে পলি-কটন দ্বারা প্রস্তুত এক ধরনের অতিক্ষুদ্র উপাদান এবং এর ঘনত্ব মানুষের চুলের এক লক্ষ ভাগের এক ভাগ। এই ক্ষুদ্র উপাদানের ওপর মলিবডেনাম সালফাইড বা MoS2 ব্যাবহার করা হয়েছে। ফলে তা সূর্যালোকের সাহায্যেই জীবাণু পরিশ্রুত করবে। অমিতবাবুর কথায় ঐ সালফাইড ছুরির মতো ব্যাকটেরিয়াকে মারবে প্রতি কোণে কোণে গিয়ে। বস্তুত এই মাস্ক হবে ৯৬ শতাংশ জীবানুরোধী এবং মাস্কের কাপড় নিশ্বাস-প্রশ্বাসে কোনোরকম বাধা তৈরি করবে না। এই মাস্ক ৬০ বার পর্যন্ত ধোয়া যাবে।
দেশ এখনো মুক্ত নয় কোভিড থেকে। তাছাড়াও ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ ইত্যাদির কারণে বড় শহরগুলিতে বাতাসে ধুলিকণা, ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য বিষাক্ত উপাদানের পরিমাণ বাড়ছে। ফলে কেবল করোনাতেই নয়, প্রাত্যহিক জীবনে সুস্থ থাকতে এই মাস্কের ব্যবহার অতি উপযোগী হবে বলেই আশা করা যায়।
এখন দেখার কত দ্রুত এই বিশেষ মাস্ক বাজারজাত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − 12 =