মেক্সিকোয় মায়া সভ্যতার খোঁজ মিলল

মেক্সিকোয় মায়া সভ্যতার খোঁজ মিলল

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩১ অক্টোবর, ২০২৪

সম্প্রতি আমেরিকার টুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লিউক অল্ড-টমাস কিছুটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই মেক্সিকোর ইউকাটান উপদ্বীপের একটি প্রাচীন মায়া সভ্যতার এক বিশাল শহরের ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পেয়েছেন। অ্যান্টিকুইটি জার্নালে প্রকাশিত এই অধ্যয়ন অনুসারে, গবেষকরা লেজার সার্ভের মাধ্যমে শহরটিতে চিচেন ইতজা এবং টিকালের মতো পিরামিড সহ ৬,৬৭৪টি পরিকাঠামো দেখতে পেয়েছেন। ঘন অরণ্যের পুরু চাদরের তলায় বহু শতক ধরে যে এক আস্ত শহর ঢাকা পড়েছিল তা আজ জানা গেল। গত কয়েক দশক ধরে লিডার (লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং) প্রযুক্তির ব্যবহারের সাথে, প্রাচীন বসতির আবিষ্কার নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাস্তুবিদ্যা, বনবিদ্যা এবং সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিজ্ঞানীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলগুলো অধ্যয়নের জন্য লিডার সার্ভে ব্যবহার করছেন। অল্ড-টমাস চেয়েছিলেন যাতে লিডার প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই গবেষণা চালানো যায়। কিন্তু তা বেশ খরচ সাপেক্ষ। সেই সময় তার হাতে আসে ওই এলাকার বন পর্যবেক্ষণের একটি গবেষণার কাজ। ২০১৩ সালে লিডার প্রযুক্তির ব্যবহারে করা ওই গবেষণাটি নিয়ে পরিবেশবিদেরা কাজ করলেও, প্রত্নতত্ত্ববিদের হাতে সেই সমীক্ষা আসেনি। অল্ড-টমাস সেই সমীক্ষাটি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন মায়া শহরটির অস্তিত্ব। আনুমানিক ১৫০০ বছর আগে যে সভ্যতা গড়ে উঠেছিল এই শহরগুলোতে, তা সবই আজ মাটির তলায় বা ঘন জঙ্গলের আস্তরণের তলায় চাপা পড়ে রয়েছে। গবেষকরা ২৫০ থেকে ৯০০ খ্রিস্টাব্দ সময়কালের এই শহরটির নাম রেখেছেন ভ্যালেরিয়ানা। ক্যামপেচে শহরের কাছে অবস্থিত এই প্রাচীন মায়া শহরটিতে পিরামিডের অস্তিত্ব মিলেছে। মন্দির, জলাশয়, খেলার মাঠ ও আরও নানা স্থাপত্য রয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। শহরটি তার বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে রাজধানী হওয়ার আদর্শ। ভ্যালেরিয়ানা শহরের কেন্দ্র থেকে আরও দূরে, পাহাড়ের ধারে টেরেস এবং বাড়িগুলো দেখা বোঝা যায় যে একটা বড়ো শহরে পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর সাহায্যেই সেখানে মানুষজন জীবনযাপন করতেন। অল্ড-থমাসের মতানুসারে মায়া সভ্যতার বৈচিত্র্য এবং ঘনত্ব ধীরে ধীরে প্রকাশিত হওয়ায় এই সময়ের অধ্যয়ন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই খোঁজে তিনি আপ্লুত, তবে তাকে ভাবিয়ে তুলছে শহরটির ধ্বংসের প্রকৃত কারণ।