শতবর্ষে কোয়ান্টাম তত্ত্বের পুনর্গঠন প্রকল্প –তিন

শতবর্ষে কোয়ান্টাম তত্ত্বের পুনর্গঠন প্রকল্প –তিন

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ মে, ২০২৫

শ্রোয়েডিঙ্গারের সমীকরণ কী করে সেই পদক্ষপটা নিতে সে বিষয়ে কিছু বলে না। কিন্তু পুনর্গঠিত কোয়ান্টাম তত্ত্বের মধ্যে থাকবে ‘ইনফরমেশন’ তত্ত্বের সুবাস। ফলে ইনফরমেশন-বাহী সিস্টেমগুলি কীভাবে পরস্পরকে প্রভাবিত করবে তা জানা যাবে। এর মধ্যে কার্য-কারণের একটা কাঠামো থাকবে যা সার্বিক আপেক্ষিকতা তও্বের দেশ-কাল চিত্রের সঙ্গে একটা সংযোগের সূত্র দেবে। কার্য-কারণ মানেই হল একটা কাল-পরম্পরা: একটা ক্রিয়া কখনো তার কারণের আগে ঘটতে পারে না। কিন্তু হার্ডির ধারণা, কোয়ান্টাম তত্ত্ব নির্মাণ করতে গেলে আমাদের যে ধরণের স্বতঃসিদ্ধ লাগবে তার মধ্যে খুব সুনির্দিষ্ট কারণ-কাঠামো থাকবে না। তাঁর মতে সার্বিক আপেক্ষিকতা তত্ত্বর সঙ্গে কোয়ান্টাম তত্ত্ব মেলালে ওইরকম একটা কিছু ঘটাই প্রত্যাশিত।

হার্ডি প্রথমে বলেছিলেন যে কোয়ান্টাম-অভিকর্ষীয় সিস্টেমগুলি হয়তো অনির্দিষ্ট কারণ-কাঠামোই দেখাবে। শিরিবেলা উৎসাহিত হয়ে এমন এক পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন যাতে কোয়ান্টাম সিস্টেমগুলির দ্বৈতদশা সৃষ্টি হবে, কিন্তু কার্য-কারণ ঘটিত কোনো নির্দিষ্ট পরম্পরা থাকবে না। ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিপ ভাল্টের-এর ল্যাবে এ পরীক্ষা এখন করা হয়েছে। হয়তো এ থেকে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংকে আরও পটু করে তোলার একটা পথ বেরোবে। শিরিবেলার মতে এটা কোয়ান্টাম পুনর্গঠনের ব্যবহারিক উপযোগিতার এক জোরালো প্রমাণ। এটা নিছক একটা বৌদ্ধিক ক্রিয়াকর্ম নয়।

কিন্তু প্রশ্ন হল, কোয়ান্টাম পুনর্গঠন কি কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানের “অর্থ” বোঝার ব্যাপারে সহায়ক হবে? হার্ডির তাতে সন্দেহ আছে। যত যাই হোক, এই পুনর্গঠনের কর্মসূচিটা তো মূলত “ক্রিয়াকর্ম” নিয়েই, এর আগ্রহটা তো নিবদ্ধ ব্যবহারকারীর স্বাচ্ছন্দ্যের উপরেই। অর্থাৎ যা পরিমাপ করা হচ্ছে তার সম্ভাব্যতার উপর। যে-“অন্তর্লীন বাস্তবতা” ওইসব সম্ভাব্যতার মূলে রয়েছে তা নিয়ে কোনো কথা এখানে বলা হবে বলে মনে হয় না। হার্ডি স্বীকার করেন, প্রথম যখন তিনি এই নতুন পরিমার্গ নিয়ে কাজে নামেন, তাঁর আশা ছিল যে কোয়ান্টাম তত্ত্বের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যার সমস্যাগুলোর সমাধান করা যাবে। কিন্তু তা হয়নি। কবেল্লো তাঁর সঙ্গে একমত। তিনি বলেছেন, এর আগেও যেসব প্রয়াস নেওয়া হয়েছে তার কোনোটিই এ তত্ত্বের কোনো একটা চূড়ান্ত গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে সমর্থ হয়নি। তবে আশা হারানোর কারণ নেই। ঠিকঠাক পরিমার্গ বেছে নিতে পারলে সমস্যা মিটে যাবেই। হার্ডি বলছেন, হয়তো এসব বাধাবিপত্তির কারণ হল, বাস্তবতার আরও মৌলিক স্তরের কোনো বিবরণ দিতে গেলে কোয়ান্টাম অভিকর্ষর যে-তত্ত্বের আশ্রয় নিতে হবে তা এখনো অনাবিষ্কৃত। “হয়তো শেষ পর্যন্ত আমরা যখন কোয়ান্টাম অভিকর্ষ তত্ত্বকে আয়ত্ত করতে পারব তখন ব্যাখ্যাটা আপনা থেকেই পরিস্ফুট হয়ে উঠবে। কিংবা হয়তো অবস্থাটা আরও খারাপ হয়ে দাঁড়াবে।”

(সমাপ্ত)
এ প্রসঙ্গে দ্রষ্টব্য:

https://bigyanbhash.org/%e0%a6%b6%e0%a6%a4%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%a4%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a7%8d/

https://bigyanbhash.org/%e0%a6%b6%e0%a6%a4%e0%a6%ac%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%9f%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%a4%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%a4-2/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × five =