শব্দ আর মুখ চিনতে অর্ধেক মগজই যথেষ্ট!

শব্দ আর মুখ চিনতে অর্ধেক মগজই যথেষ্ট!

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৮ অক্টোবর, ২০২২

আমাদের প্রতিদিনের যেসব কাজ, তা সাধারণভাবে মস্তিষ্কের দুটো গোলার্ধ মিলেই করে। কিন্তু একটা গোলার্ধ দিয়েই কি সেসব কাজ করা সম্ভব? প্রোসিডিংস অফ দ্য ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস পত্রিকায় একটা গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। মানুষের শরীরে নিউরোপ্লাস্টিসিটি বিষয়টা নিয়ে এমন গবেষণা এই প্রথম।
নিউরোপ্লাস্টিসিটি ব্যাপারটা কী? গঠনগত বা কার্যগতভাবে মস্তিষ্ক যখন বাইরের পরিবেশে পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য নিজের সক্রিয়তা বদলে নেয়, অভ্যন্তরীণ যোগসূত্রগুলো নতুনভাবে তৈরি করে নেয়, সেই প্রক্রিয়াকেই বলে নিউরোপ্লাস্টিসিটি। একেবারে শৈশবে যেমন এই প্রক্রিয়া তার চরম সীমায় থাকে, তেমনই বয়ঃসন্ধি দশাতেই কমবেশি চলতে থাকে। বয়েস যত বাড়ে, মস্তিষ্কের দুই গোলার্ধ ততই বিশেষীকৃত হয়ে ওঠে। অর্থাৎ তাদের কাজকর্মের তালিকা আর ধরণ সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায়। যেমন, মগজের বাম গোলার্ধ ছাপার অক্ষর পড়তে পারে, আবার ডান গোলার্ধ মানুষের মুখ চিনতে সাহায্য করে।
কিন্তু যদি এই নির্দিষ্ট শ্রমবিভাজন পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিজ্ঞানীরা একটা বিশেষ রোগীর দলের উপর পরীক্ষা চালিয়েছেন। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যাদের মস্তিষ্কের দুই গোলার্ধের মধ্যে একটা কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে ছোটবেলাতেই।
ছাপা শব্দ চিনতে পারার দক্ষতা পরীক্ষা করার জন্যে সেই রোগীদের সামনে শব্দের জোড় রাখা হয়েছিল। শব্দের জোড় এমন ছিল যাদের মধ্যে মাত্র একটা অক্ষরের ফারাক। যেমন – সুপ আর সোপ, ট্যাঙ্ক আর ট্যাক ইত্যাদি। মানুষের মুখ চেনার ক্ষমতা কতটা সেটা দেখার জন্যে দুটো করে ছবি রাখা হয়। সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে তাদের বলতে হত শব্দের জোড় আলাদা কিনা, আর মানুষের ছবি দুটো আলাদা কিনা। দেখা গেছে, রোগীদের মস্তিষ্কের যে গোলার্ধটা কাজ করছিল, সেটা দিয়েই তারা ঐ দুটো কাজ ভালভাবেই করতে পেরেছেন। তাদের গড় সাফল্যের হিসেবটা ৮০%।