শিকারীর হাত থেকে বাঁচতে স্কুবা ডাইভিং

শিকারীর হাত থেকে বাঁচতে স্কুবা ডাইভিং

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সবচেয়ে ছোটো স্কুবা ডাইভারের খোঁজ মিলল। দক্ষিণ কোস্টারিকায় এক ধরনের ছোটো টিকটিকি দেখা যায়, যা ডাঙায় বাস করলেও ভয় পেলে জলে ঝাঁপ দেয়। আর জলে এরা মিনিট ২০ বা তার বেশি বুদবুদ তৈরি করে ডুবে থাকতে পারে। অ্যানোল নামে পরিচিত জঙ্গলের এই টিকটিকিগুলো প্রাণীদের কাছে চিকেন নাগেটেসের মতো সুস্বাদু। পাখি, সাপ এদের দেখলেই টপাটপ খায়। তাই শিকারীর দেখা পেলেই এরা জলে ঝাঁপ দেয়, আর স্থির হয়ে জলের তলায় ডুবে থাকে। খুব ভালো ক্যামোফ্লেজ জানা এই টিকটিকিগুলো শিকারী চলে না যাওয়া অবধি আর ডাঙায় ওঠেনা। এই জলজ অ্যানোলগুলোকে জলে ডুবে থাকতে সাহায্য করে, এদের নাকের ওপরে তৈরি হওয়া বুদবুদ। বিংহামটন ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কের লিন্ডসে সোয়র্ক, জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক এদের নিয়ে অধ্যন করে দেখেছেন, জলে ডুবে থাকা অবস্থায় এরা নাকের ওপর বুদবুদ তৈরি করে। এই বুদবুদ তাদের জলে ডুবে থাকতে সাহায্য করে কিনা, তা গবেষকরা দেখতে চেয়েছিলেন।
তারা দেখেছেন, বুদবুদ থেকে এরা অক্সিজেন সংগ্রহ করে। টিকটিকির ত্বক জলরোধী। বাতাস এদের ত্বকে খুব শক্তভাবে আটকে থাকে আর বুদবুদ তৈরি হয়। কিন্তু তারা এক দল অ্যানোলের ত্বক ইমোলিয়েন্ট দিয়ে ঢেকে দেন, তখন বাতাস আর তাদের ত্বকের পৃষ্ঠে লেগে থাকে না, তাই বুদবুদ তৈরি হতে পারে না। আর এক দল অ্যানোল স্বাভাবিকভাবে জলে ডুবে বুদবুদ তৈরি করে। তারা দেখেন, যারা বুদবুদ তৈরি করতে পারেনি তারা জলে কম সময় ডুবে থাকতে পেরেছে। স্বাভাবিকভাবে যারা বুদবুদ তৈরি করতে পেরেছে তারা আরও ৩২% সময় জলে বেশি থেকেছে। গবেষকদের মতে এই বুদবুদ এই ধরনের টিকটিকির অভিযোজন।
সোয়র্ক এখন দেখতে চান, এই টিকটিকি কোনো ফুলকা ব্যবহার করছে কিনা। কীটপতঙ্গের ফুলকা জলের নিচে শ্বাস নিতে বুদবুদ ব্যবহার করে। তবে পোকামাকড় ছোটো, তাই অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তা তাদের কম, বুদবুদের বাতাসে জল থেকে যে পরিমাণ অক্সিজেন ঢোকে তা তাদের শ্বাস নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু অ্যানোলদের আকার বুদবুদ থেকে অক্সিজেন নিয়ে ডুবে থাকার পক্ষে বেশ বড়ো। তাই এই অ্যানোল ফুলকার মতো কোনো প্রক্রিয়া চালায় কিনা তা নিয়ে তারা আরও পরীক্ষা করছেন।