শিশুদের চাহিদার অর্ধেক ক্যালোরি আসে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাদ্য থেকে

শিশুদের চাহিদার অর্ধেক ক্যালোরি আসে অতি-প্রক্রিয়াজাত খাদ্য থেকে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ অক্টোবর, ২০২৪

 

ইউরোপের বাচ্চারা তাদের ক্যালোরির ৪৭% অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার (UPFs) থেকে পায়, আর সাত বছর বয়সের মধ্যে এই খাবার থেকে ক্যালোরি পাওয়ার হার বেড়ে ৫৯% হয়ে যায়। ইউরোপীয় জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত এই সমীক্ষায় ২০০৭ এবং ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণকারী ২৫৯১ জন শিশুর তথ্যের রেকর্ড নেওয়া হয়েছে। তাদের বাবা-মা তিন দিনের মধ্যে তাদের বাচ্চারা কী খেয়েছে আর পান করেছে তার রেকর্ড রেখেছিলেন। ২১ মাসের ছোটো বাচ্চাদের সবচেয়ে সাধারণ অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার ছিল ফ্লেভারওয়ালা ইয়োগার্ট, প্রাতঃরাশের জন্য গোটা শস্যের সিরিয়াল। যাকে সাধারণত স্বাস্থ্যকর হিসেবে ভাবা হয়। সাত বছর বয়সে, সব-চেয়ে সাধারণ অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার ছিল মিষ্টি সিরিয়াল, ময়দার পাঁউরুটি, পুডিং। ইউসিএল ইন্সটিটিউট অফ এপিডেমিওলজি অ্যান্ড হেলথ কেয়ারের প্রধান গবেষক ডঃ রানা কনওয়ে বলেন, অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার সব সময় অস্বাস্থ্যকর না হলেও, এরকম অনেক খাবারে লবণ ও চিনির মাত্রা খুব বেশি থাকে। সেগুলো ছোটো শিশুদের খাওয়া একদম ঠিক নয়। এছাড়া গোটা দানার খাদ্যশস্যের স্বাদ ছোটোবেলা থেকে না পেলে বড়ো হয়ে তাতে আর শিশুরা অভ্যস্ত হয়না। ফলে তাদের স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস তৈরি হয়না। ছোটোবেলায় খাবারের অভ্যাস তৈরি হয়ে যায়, ২১ মাস বয়সে যে শিশুরা অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খায়, তাদের সাত বছর বয়সে এই ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
খাদ্য ও পানীয়কে চারটে দলে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রক্রিয়াবিহীন বা ন্যূনতম প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন ডিম, দুধ, শাকসবজি, মাছ, ফল; প্রক্রিয়াজাত উপাদান যা রান্নায় লাগে, যেমন লবণ, মাখন এবং তেল; প্রক্রিয়াজাত খাবার- টিনবন্দী মাছ, চিনাবাদাম মাখন পনির; আর অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার, যেমন শস্য, দই, কারখানায় তৈরি রুটি, বিস্কুট, সসেজ, ক্রিস্প। অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে শিশুরা অনেক সময় ইউরোপের সরকারের বেঁধে দেওয়া চিনির মাত্রার বেশি চিনি গ্রহণ করছে। গবেষকরা এ বিষয়ে সীমারেখা টানতে পলিসি গ্রহণ করতে বলেছেন, যাতে শিশুদের জন্য অতি-প্রক্রিয়াজাত খাদ্য প্রচারের আলোয় বেশি না আসে, খাদ্যের মোড়কে সতর্কীকরণ লিখে দেওয়া, টাটকা খুব কম প্রক্রিয়াজাত খাদ্যতে ভর্তুকির ব্যবস্থা যাতে তা সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় হয়।