অনেক শুঁয়োপোকার কিছু নির্দিষ্ট পছন্দের খাদ্য রয়েছে। যেমন, মোনার্ক প্রজাপতি শুধুমাত্র মিল্কউইড গাছপালা খায়, আবার লাইম প্রজাপতি লেবু পাতা খেতে অভ্যস্ত। সাধারণ পূর্বপুরুষ প্রজাতি হওয়া সত্ত্বেও, তাদের খাদ্যের এই আলাদা আলাদা পছন্দের পেছনে কারণ জানতে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের (NUS) গবেষকরা অধ্যয়ন করেছেন। পূর্বের গবেষণায়, তারা দেখেছিলেন যখন শুঁয়োপোকা তাদের স্বাভাবিক খাদ্যের বাইরে পাতা খায়, তখন তারা কয়েক দিন পরেই সেই ধরনের গাছের গন্ধ পছন্দ করতে থাকে। আশ্চর্যভাবে, এই শুঁয়োপোকাদের সন্তানরাও তাদের বাবা মায়ের পছন্দের পথেই হাঁটে। এই ধরনের ঘটনা প্রকৃতিতেও দেখা যায়। স্ত্রী প্রজাপতি ভুলবশত অন্য গাছে ডিম পাড়লে শুঁয়োপোকারা নতুন উদ্ভিদে নিজেদের খাদ্য খুঁজে পায়। নতুন উদ্ভিদের নতুন ধরনের গন্ধ থাকে, শুঁয়োপোকারা এই নতুন গন্ধ পছন্দ করতে শুরু করে আর এই পছন্দ তাদের সন্তানদের কাছেও প্রেরিত হয়। এই ধরনের উত্তরাধিকার হোস্ট স্যুইচিং ও নতুন প্রজাতি গঠনের সুবিধা দিতে পারে।
এই অভিযোজিত আচরণের কারণ জানার জন্য, গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেন, শুঁয়োপোকার রক্ত বা হিমোলিম্ফে এক ধরনের নিয়ন্ত্রক থাকে। শরীরের আভ্যন্তরীণ সমস্ত অংশের মতো মস্তিষ্ক, প্রজনন অঙ্গ উভয়ই ডুবে থাকে, তাতে নতুন পছন্দের গন্ধ উত্তরাধিকার সূত্রে সন্তানদের মধ্যে যায়। শুঁয়োপোকার হিমোলিম্ফের ফ্যাক্টর মস্তিষ্ক থেকে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু পরিবহনে মধ্যস্থতা করতে পারে, যা পরবর্তী প্রজন্মের গন্ধ পছন্দকে প্রভাবিত করে। অথবা এই নিয়ন্ত্রক খাদ্য থেকে এই উপাদান পরবর্তী প্রজন্মের ভ্রূণের মস্তিষ্কে স্থানান্তর করে। এই পরীক্ষা এও দেখায় যে গন্ধের প্রতি পছন্দ অ্যান্টেনার মাধ্যমে শুঁয়োপোকার শরীরে প্রবেশ করার প্রয়োজন পড়ছেনা। গবেষকরা একটা সম্ভাব্য প্রক্রিয়ার পরামর্শ দেন যে শুঁয়োপোকারা বিবর্তনের সময় তাদের পছন্দের খাদ্য করতে পারে। তাদের গবেষণা বায়োলজি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।