সংরক্ষিত অভয়ারণ্যেও প্রাণীদের বেঁচে থাকায় মানুষের প্রভাব

সংরক্ষিত অভয়ারণ্যেও প্রাণীদের বেঁচে থাকায় মানুষের প্রভাব

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ জুলাই, ২০২৩

রাইস ইউনিভার্সিটির ইকোলজিস্ট লিডিয়া বিউড্রট এবং তার দল একটা সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে শুধুমাত্র সুরক্ষিত অভয়ারণ্যে রাখলেই গ্রীষ্মমন্ডলীয় স্তন্যপায়ী বন্যপ্রাণীদের রক্ষা করা সম্ভব নয়। কারণ এই এলাকার সীমানার কাছাকাছি অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের কাজের প্রভাব এই সুরক্ষিত অঞ্চলের বন্যপ্রাণীদের ওপর পড়ে। কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনাল, ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি এবং স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে কয়েক বছর ধরে সংগৃহীত ক্যামেরা ট্র্যাপ ছবি ব্যবহার করে এই গবেষণার সমীক্ষা করা হয়েছে। তিনটে অঞ্চলে ১৬টা সুরক্ষিত এলাকায় ১৫৯টা স্তন্যপায়ী প্রজাতির উপর ভিত্তি করে এই গবেষণায় দেখা গেছে যে বিশেষ কিছু প্রজাতি সাধারণ প্রজাতির তুলনায় আবাসস্থল ভাগ হয়ে গেলে বা মানুষের জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন প্রভাবক দ্বারা বেশ প্রভাবিত হয়ে থাকে। বিশেষ কিছু প্রজাতি, যেগুলো নির্দিষ্ট আবাসস্থলের উপর নির্ভরশীল, তারা ভূমি বিশেষ ভাগ না হলে সুস্থভাবে বাঁচতে পারে, কিন্তু শিকারের কারণে এবং মানুষের বনভূমি ব্যবহারের কারণে এদের জীবন বেশ সঙ্কটপূর্ণ হয়ে পড়ে। এইজন্য হোয়াইট বেলিড প্যাঙ্গোলিনকে উগান্ডার অভায়ারণ্যের মাঝামাঝি স্থানে আনা প্রয়োজন।  সাধারণ  প্রজাতি, বিভিন্ন বাসস্থানের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, কিন্তু সংরক্ষিত এলাকার প্রান্তের দিকে মানুষের জনসংখ্যার ঘনত্ব কম হলে তবেই এই প্রাণীরা সেখানে সফলভাবে বসবাস করতে পারে। যেমন কুকুরের মাপের ট্যায়রা বনভূমি, ঘাসজমি, চাষজমির কাছাকাছি থাকতে পারে, এরা বনের প্রান্তস্তলে তখনই সুস্থভাবে বাঁচতে পারবে, যদি সেখানে মানুষের বসবাস কম হয়।

30 by 30 Initiaive – এর প্রবক্তারা ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ৩০% ভূমি এবং মহাসাগরকে রক্ষা করার জন্য প্রচার করছে৷ এই সংরক্ষণের প্রচেষ্টা সফল করার জন্য সুরক্ষিত এলাকায় বন্যপ্রাণীদের থাকার পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যে প্রভাব বিস্তারকারী বাহ্যিক কারণ এই দুটো বিবেচনা করতে হবে৷ মানুষের বিভিন্ন কাজের প্রভাবে বন্য প্রাণীর নানা প্রজাতির নির্দিষ্ট কী প্রতিক্রিয়া হয় তা বুঝতে পারলে, তাদের সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং তার জন্য কোন ব্যবস্থার মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া যেতে পারে তা বোঝা যাবে। এই গবেষণা স্থানীয় সম্প্রদায়ের সাথে জড়িত এবং বন্যপ্রাণী এবং মানুষ উভয়ের চাহিদা বিবেচনা করে একটি সামগ্রিক পদ্ধতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। কার্যকরভাবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য সাথে জড়িত 30 by 30 Initiaive – এর নীতিনির্ধারকরা এই গবেষণার ফলাফল থেকে উপকৃত হতে পারেন।