সফট রোবোটিক্সে ব্রেইল বিপ্লব

সফট রোবোটিক্সে ব্রেইল বিপ্লব

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন এবং দৃষ্টিহীন মানুষের জন্য স্পর্শই বিশ্বকে বোঝার ও যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এ ব্যাপারে উনিশ শতকে লুই ব্রেইল সৃষ্ট ছয়- বিন্দু পদ্ধতি আজও অপরিহার্য। কিন্তু বিন্দুগুলি স্থায়ীভাবে খোদাই করা থাকে বলে আজকের ডিজিটাল যুগে এর ব্যবহার সীমিত। এই সীমাবদ্ধতা কাটাতে ব্রেইল ডিসপ্লে নিয়ে নতুন গবেষণা চলছিল। কিন্তু অনেক লাইনের ব্রেইল যুক্ত করলে বিদ্যুৎ খরচ, ওজন ও ব্যয় দ্রুত বেড়ে যাচ্ছিল। সেই অসুবিধা দূর করবার জন্য আর হেইজার ও তাঁর সহকর্মীরা একটি সফট রোবোট ভিত্তিক বহু লাইন-যুক্ত স্পর্শ-সুবেদি (ট্যাকটাইল) ডিসপ্লে তৈরি করেছেন। এতে ১০×১০ বিন্দুর একটি বিন্যাস রয়েছে। সেখানে প্রতিটি বিন্দু নরম, গম্বুজাকৃতি ঝিল্লি দিয়ে তৈরি। প্রতিটি বিন্দু আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় ক্ষুদ্র জ্বলন (কম্বাসশন) সিলিন্ডার থেকে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ বিস্ফোরণের চাপের মাধ্যমে। এই চাপ মাত্র ০.২৪ মিলিসেকেন্ডে বিন্দুকে সক্রিয় করতে পারে। পুনঃব্যবহারের জন্য ভ্যাকুয়াম সাকশন ব্যবহার করে ডটগুলিকে উল্টে নেওয়া হয়। ফলে ডিসপ্লেটি দ্রুত নতুন প্যাটার্ন তৈরি করতে সক্ষম। ব্রেইল পাঠে অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীরা এই কৌশলে ব্রেইল লেখা ও সহজ স্পর্শ -সুবেদি (ট্যাকটাইল) ইমোজি সফলভাবে শনাক্ত করতে পেরেছেন। বর্তমান প্রোটোটাইপে অবশ্য মাত্র ১০০টি বিন্দু রয়েছে, কিন্তু গবেষকেরা এটিকে আরও বড় ছকে সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখছেন। এর স্বয়ংসম্পূর্ণ নকশা এটিকে ‘কমপ্যাক্ট ডেস্কটপ ডিভাইস’ হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ করে দেয়। পাশাপাশি, মুখ -আঁটা কাঠামো থাকায় এটি ভেজা বা ধুলোযুক্ত পরিবেশেও কার্যকর হতে পারে, যেমন- সংগ্রহশালা বা লাইব্রেরির ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্র। এই গবেষণা থেকে দেখা যায়, সফট রোবোটিক্স কীভাবে ডিজিটাল যুগে প্রবেশাধিকার ও অন্তর্ভুক্তির একটি বাস্তব ও জরুরি সমস্যার কার্যকর সমাধান দিতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 15 =