সমুদ্রের নীচে ডিম বোঝাই আগ্নেয়গিরি জাগে উঠছে

সমুদ্রের নীচে ডিম বোঝাই আগ্নেয়গিরি জাগে উঠছে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৪ জুলাই, ২০২৩

২০২৩ সালের উত্তর-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর অভিযানের অভিযাত্রীর দল সমুদ্রে জলের তলায় আগ্নেয়গিরি দেখতে পেয়েছেন যেটি এতদিন মৃত বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল। কানাডার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে সমুদ্রের গভীরে নিমজ্জিত এই আগ্নেয়গিরি গরম তরল নির্গত করছে এবং আগ্নেয়গিরির চূড়ায় হাজার হাজার ডিমের মতো জিনিস দেখা গেছে। পর্যবেক্ষণ করে জানা গেছে যে ডিমগুলো বিরল প্রজাতির প্যাসিফিক হোয়াইট স্কেট (বাথিরাজা স্পিনোসিসিমা) -এর ডিম। ডিমগুলো দেখতে অভিনব, বড়ো বড়ো চৌকাকার, অনেকটা হাতের পার্সের মতো তাই এগুলোকে কখনও কখনও “মারমেইড পার্স”ও বলা হয়। স্কেট, রাজিডে পরিবারের অন্তর্গত কার্টিলাজিনাস বা তরুণাস্থি মাছ। একটি প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা প্রজাতির স্কেট প্রায় ৬.৫ ফুট লম্বা ও মানুষের চেয়েও বড়ো হতে পারে । সাধারণত তারা জলে নীচে ৮০০-২৯০০ মিটারের মধ্যে বসবাস করে এবং তাদের ডিমগুলো প্রায় ১.৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। গবেষকের দল মনে করেন যে আগ্নেয়গিরির আশপাশের উত্তাপ এদের জীবনধারণ করতে সাহায্য করছে। স্কেটের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়া থেকে এদের বেড়ে ওঠায় চার বছর সময় লাগে এবং উষ্ণ জল সম্ভবত ডিমের ইনকিউবেশনকে ত্বরান্বিত করে।
গবেষকরা প্রত্যাশা করেছিলন যে আগ্নেয়গিরিটি মৃত তাই এর মুখ বা ভেন্ট, যা সমুদ্রতল থেকে ১১,০০ মিটার উচ্চতায় রয়েছে, এর কাছে ঠান্ডা জল থাকবে, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে উষ্ণ জল নির্গত হচ্ছিল এবং প্রবাল দ্বারা আবৃত ছিল। সমুদ্রের জলের উষ্ণতা এবং খনিজ পদার্থের উপস্থিতি দেখে গবেষকদের মত যে সামুদ্রিক উৎপাদকরা এখানে বেঁচে থাকতে পারে এবং একটি স্থানীয় ফুড ওয়েব বা খাদ্য জালও তৈরি হতে পারে। কানাডার ফিশারিজ অ্যান্ড ওশেন্সের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী চেরিসে ডু প্রিজ বলেছেন আগ্নেয়গিরির নির্গমণপথের উষ্ণ আবহাওয়া ডিম পাড়া ও তার ইনকিউবেশনের স্থল হিসেবে কতটা কার্যকরী তা তারা আরও পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন।