গ্লাসগোয় ক্লাইমেট চেঞ্জিং সামিট শেষ হল আট দিন হয়েছে। সেখানে ২০০-র বেশি দেশ অঙ্গীকার নিয়েছে (অন্তত মুখে) যেভাবেই হোক পৃথিবীর উষ্ণায়ন কমানোর জন্য বায়ুদূষণ কমাতে হবে আর এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হবে কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, তেলের মত জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। পরিবর্ত ব্যাবস্থায় তৈরি করতে হবে অজীবাশ্ম জ্বালানি।
গ্রেটা থুনবার্গ গ্লাসগো সামিটের শেষে ঠিকই বলেছেন যে, সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানদের শুধু মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই প্রাপ্তি হয়নি। সোমবার আবু ধাবিতে এনার্জি সামিট শুরু হল। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশের সরকারের প্রতিনিধিরা, যারা গ্লাসগোয়ও ছিলেন। তারা আট দিন আগে পর্যন্ত ‘পুলিশকে চোর ধরতে বলছিলেন!’ সোমবার এনার্জি সম্মেলনে সেই একই মানুষগুলো ‘চোরকেও বললেন চুরি করতে!’ অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন আরও বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেন! এমনকী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন সরকারের প্রতিনিধিরাও ওপেক-কে নির্দেশ দিয়েছেন তেলের উৎপাদন আরও বাড়াতে! আমেরিকা, চিন, ভারত সহ ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন শহরের পেট্রোল পাম্পগুলোতে পেট্রোল আর ডিজেলের দাম যেভাবে আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে তাতে যোগান না বাড়ালে এই দামকে নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে যাবে। আবু ধাবির জাতীয় তেল কোম্পানির ডিরেক্টর আল-জাবের জানিয়ে দিয়েছেন ২০৩০-এর মধ্যে তেল আর প্রাকৃতিক গ্যাস শিল্পে ৬০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করার প্রয়োজন। নাহলে নাকি পৃথিবীর চাহিদা মেটানো যাবে না!
ভারতের কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী কী বার্তা দিয়েছেন আবু ধাবির এই এনার্জি সম্মেলনে শুনবেন? জানিয়েছেন, ২০৭০-এর মধ্যে গ্রীনহাউস গ্যাস নির্গমনকে শূন্যে নামিয়ে আনা? প্রায় অসম্ভব! মুখে বলা যেতেই পারে! কিন্তু কাজে তাকে বাস্তবায়িত করা যায় নাকি! তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে মোট যতটা এনার্জি খরচ হয় তার এক-তৃতীয়াংশ খরচ ভারতে হয়! কিন্তু পরিমাণটা বাড়ছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি আর আর্থিক উন্নয়নের জেরে।
তাহলে গ্লাসগোয় নেওয়া অঙ্গীকার? হরদীপ পুরীর বক্তব্য, দু’টোই বাস্তব। ভারসাম্য রেখে চলতে হবে! কীভাবে ভারসাম্য রাখা হবে তার নমুনা এনার্জি সম্মেলনের প্রথম দিনেই দেখা গেল!