সিঙ্গাপুর : পৃথিবীর সবচেয়ে ক্লান্তির দেশ

সিঙ্গাপুর : পৃথিবীর সবচেয়ে ক্লান্তির দেশ

অর্পণ নস্কর
Posted on ৩১ অক্টোবর, ২০২১

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের একটি রিপোর্টে চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে- সিঙ্গাপুর হলো সবচেয়ে ক্লান্তির দেশ। ঘুমহীনতার দেশ। প্যাণ্ডেমিক পরিস্থিতিতে বিছানা ছাড়া থেকে রাতে বিছানায় শুতে যাওয়া আমরা ক্লান্তই হয়ে থাকতাম বা বলা চলে বোর হয়ে থাকতাম একরকম ভাবে। সারাদিন চার দেওয়ালের মধ্যেকার বন্দি অবস্থা আমাদের জীবনকে বিষ্ময়হীন করে তুলেছিল।
সে অবস্থা কাটতে শুরু করেছে। ঘরের বাইরে পা পড়েছে আস্তে আস্তে আমাদের। সেই পরিস্থিতিতেই যুক্তরাজ্যের এই তথ্য চিন্তার বিষয় বটেই।

রিপোর্ট অনুসারে ১৫ টি সবচেয়ে ক্লান্তির বা ঘুমহীনতার দেশ এরকম-
(ফ্যাটিগ স্কোর – ১০ এ)
সিঙ্গাপুর – ৭.২০
মেক্সিকো – ৭.০১
ব্রাজিল- ৬.২৮
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- ৫.৫৭
নিউজিল্যান্ড – ৪.৭৪
অস্ট্রেলিয়া- ৪.৭২
চীন- ৪.৫৯
কানাডা- ৪.৩৯
ইটালি- ৩.৮৫
সুইজারল্যান্ড – ৩.১২
জার্মানি- ৩.১১
ফ্রান্স- ২.৪৪
নেদারল্যান্ডস – ২.০১

ফ্যাটিগ স্কোর করার জন্যে সাতিস্তা, উইকিপিডিয়া, ‘বিজনেস ফাইবার ডট কো ডট ইউ কে’, গুগল কিওয়ার্ড প্ল্যানার ইত্যাদি থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যেমন উইকিপিডিয়া থেকে জানা হয়েছে কোনো দেশে একজন মানুষ গড়ে বছরে কতক্ষন কাজ করছেন। ‘বিজনেস ফাইবার ডট কো ডট ইউ কে’ থেকে জানা হয়েছে কোনো দেশে প্রতিদিন গড়ে একজন মানুষ কতক্ষন ইন্টারনেটে কাজ করছেন বা সময় কাটাচ্ছেন, বা সাতিস্তা থেকে জানা হয়েছে প্রতিদিন যে ৮ ঘন্টা ঘুমের সময় তার থেকে কত কম সময় ঘুমাচ্ছেন মানুষ কোনো দেশের গড় হিসেবে ইত্যাদি।
ক্লান্তির বড় কারণ কাজের সময়। কতক্ষন কাজ করছেন ব্যক্তি। তবে সব সময় কাজের সময় বেশি হলেই ক্লান্তি ঘুমহীনতা বেশি এমনটা নাও হতে পারে- রিপোর্টের অন্য চার্ট থেকেই স্পষ্ট তা। আবার ইন্টারনেটে সময় কাটানো মানেই কাজের জন্যে এমনটাও নয়।

বছরে গড় কাজের হিসেব দেশানুসারে

মেক্সিকো – ২২৫৫ ঘন্টা
সিঙ্গাপুর – ২২৩৮ ঘন্টা
চীন – ২১৭৪ ঘন্টা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- ১৭৫৭ ঘন্টা
নিউজিল্যান্ড – ১৭৫২ ঘন্টা
জাপান- ১৭৩৮ ঘন্টা
ইটালি – ১৭২৩ ঘন্টা
ব্রাজিল – ১৭০৯ ঘন্টা
কানাডা – ১৬৯৬ ঘন্টা
যুক্তরাজ্য- ১৬৭০ ঘন্টা
অস্ট্রেলিয়া- ১৬১৩ ঘন্টা
সুইজারল্যান্ড – ১৫৯০ ঘন্টা
ফ্রান্স – ১৫১৪ ঘন্টা
নেদারল্যান্ডস – ১৪৩০ ঘন্টা
জার্মানি- ১৩৫৪ ঘন্টা

দেখা যাচ্ছে কাজ অনেক বেশি করা সত্বেও গড় ক্লান্তি কম হতে পারে কোনো দেশের। যেমন চীনের গড় কাজের সময় জাপানের থেকে অনেক বেশি। কিন্তু চীনের ফ্যাটিগ স্কোর জাপানের থেকে কম। (পাঠক আপনিও চার্ট দেখে খুঁজতে পারেন)

আবার ইন্টারনেটে প্রতিদিনগড়ে সময় কাটানোর পরিমাণ দেখা যাক

ব্রাজিল – ৯ ঘন্টা ২৯ মিঃ
মেক্সিকো – ৮ঘন্টা ১ মিনিট
সিঙ্গাপুর – ৭ ঘন্টা ২ মিনিট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- ৬ ঘন্টা ৩১ মিনিট
ইটালি – ৬ ঘন্টা ৩১মিনিট
নিউজিল্যান্ড – ৫ ঘন্টা ৫৫ মিনিট
চীন – ৫ ঘন্টা ৫২ মিনিট
কানাডা – ৫ ঘন্টা ৫১ মিনিট
যুক্তরাজ্য – ৫ ঘন্টা ৪৬ মিনিট
অস্ট্রেলিয়া- ৫ ঘন্টা ৪ মিনিট
সুইজারল্যান্ড – ৪ ঘন্টা ৫৮ মিনিট
নেদারল্যান্ডস – ৪ ঘন্টা ৪৪ মিনিট
ফ্রান্স – ৪ঘন্টা ৩৮ মিনিট
জার্মানি – ৪ ঘন্টা ৩৭ মিনিট
জাপান- ৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট

দেখা যাচ্ছে ইন্টারনেটে কাটানো সময় মানেই কাজের সময় নয়। ব্রাজিলের গড় কাজের সময় অন্য অনেক দেশের থেকে কম। কিন্তু প্রতিদিনের গড় ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়ে সবার উপরে। সুতারাং বলা যায় কাজ ব্যাতিত অনলাইন অ্যাকসেস কীভাবে মানুষের সময় গিলে খায়। তবে সিঙ্গাপুর আর মেক্সিকো তিনটি তালিকাতেই শীর্ষে। সুতারাং ভাবা যেতে পারে এদুটি দেশের মানুষের কাজের সময় বা অনলাইন অ্যাকসেস কতটা গতে বাঁধা। তাই কি ক্লান্তিতেও শীর্ষে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 9 =