সুখের চাবিকাঠি

সুখের চাবিকাঠি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১৪ আগষ্ট, ২০২৪
সুখের-চাবিকাঠি

জীবনে ভালো থাকতে গেলে সব থেকে জরুরি খুশি থাকা। খুশি থাকতে আমরা সবাই চাই। কিন্তু এই খুশি থাকবো কী করে? রোজকার জীবনে গুচ্ছ গুচ্ছ জটিলতা আর খুশি থাকতে দিচ্ছে কই? আজকাল আমরা সকলেই ছুটছি। প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে গিয়ে উদ্বেগ যদি আকাশছোঁয়া হয়ে যায়, তাহলে খুশি বা আনন্দ মনের জানলা দিয়ে বেরিয়ে যায়। মনোবিদেরা বলেন, নিজেকে ভালো রাখতে, খুশি রাখতে, সুখে রাখতে নিজেকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তার জন্য কিছু অভ্যাসে বদল আনা খুবই দরকার। নিজের সুস্থতা এবং সুখের ক্ষেত্রে নিজের ভালো লাগাটাই আসল কথা। নিজে ভালো থাকলে, খুশি থাকলেই চারপাশের সকলকে ভালো রাখা যায়। সম্প্রতি এমন কথাই তুলে ধরেছে এক গবেষণা। গবেষণাটি ইমোশন নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, আমরা কতটা খুশি তার চুলচেরা বিচার করলে তা আমাদের জীবনের শান্তি বিঘ্নিত করে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতায়। ১৮০০ জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে পরিচালিত তিনটি গবেষণায় গবেষকরা দেখেন নিজের সুখে থাকা বা খুশি থাকা নিয়ে উদ্বেগ বা বিচার নিজের ভালো থাকায় বিঘ্ন ঘটায়। ইতিবাচক ঘটনাগুলোও তাদের কাছে হতাশাজনক হয়ে ওঠে। নিজের সুখের মাপকাঠি নিয়ে ভাবতে গিয়ে মানুষ অন্যের সুখের পরিমাপ করে, ভীত হয়ে ভাবে সে অন্যের মতো সুখী নয়। ‘ওর ওটা আছে, আমার কেন নেই’— এ ধরনের চিন্তা অহেতুক উদ্বেগ বাড়ায়। এমনকি অন্যের সঙ্গে যে কোনও বিষয়ে তুলনা টানা শুরু করলে এক সময়ে মনের উপর চাপ বেড়ে যায়। গবেষকদের মতে নিজের আবেগগুলো অনুভব করতে হবে। আবেগ ইতিবাচক বা নেতিবাচক যাইহোক না কেন, খোলা মনে তা গ্রহণ করতে হবে। তবেই মানসিকভাবে ভালো থাকা যাবে। পূর্ববর্তী কিছু গবেষণার বিপরীতে, বর্তমান গবেষণায় দেখা গেছে যে সুখের অন্বেষণ, বা সুখকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসাবে দেখা, কোনোটাই ভালো থাকার উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেনা। তবে নিজের সুখের মাত্রা বিচার করতে শুরু করলে তা ক্ষতি করে নিজেদের। নিজের সুখের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হলে জীবনে সন্তুষ্টি পাওয়া যায় না। মানসিকভাবেও ভালো থাকা যায় না। হাতাশায় ভরে যায় জীবন। নিজের গুণ, বৈশিষ্ট্যগুলো বিশ্লেষণ করে, ভাবনায় নতুনত্ব আনতে হবে। তা হলেই ভালো থাকা যাবে। প্রত্যাশা যত বেশি মনে খুশি থাকার অনুভূতি তত কম। কারণ সে খুশির নাগাল মন কখনই পাবে না।