সূর্যের আলো বিভিন্ন সময়ে দুর্ঘটনা জনিত কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠে ছড়িয়ে থাকা তেল পরিশ্রুত করে আগের ভাবনার চেয়েও দ্রুত গতিতে। ২০১০ সাল পরবর্তী সময়ে মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলে সূর্যালোক আগের ভাবনার চেয়ে ১৭% দ্রুত হারে সমুদ্রপৃষ্ঠে ছড়িয়ে থাকা তেল পরিশ্রুত করেছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১৬ তারিখে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্স’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায় এই রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
সূর্যের আলো যখন সমুদ্রপৃষ্ঠে ছড়িয়ে থাকা তেলের ওপর এসে পড়ে তখন শুরু হয় ধারাবাহিক রাসায়নিক বিক্রিয়া। সূর্যের আলো সেই বিক্রিয়ার কাজে ধাক্কা মারার কাজটি করে। এরফলে তেল কিছু রাসায়নিক যৌগে পরিবর্তিত হয়। এবং বিক্রিয়ায় একসময় তেল জলে দ্রবীভূত হয়। এই বিক্রিয়া প্রক্রিয়ার নাম ফোটোডিসলিউশান। কিন্তু ঠিক কত পরিমান তেল জলে দ্রবীভূত হয় তা নিয়ে কম তথ্য হাতে ছিল।
এ তথ্য পরীক্ষার জন্যে উডস হোল ওসিওনোগ্রাফিক ইন্সটিটিউশান ইন ম্যাসাচুসেটস এর পরিবেশ রসায়ণবিদ ডেনিয়েল হ্যাস ফ্রিমেন এবং কলিন ওয়ার্ড যৌথ ভাবে একটি পরীক্ষার আয়োজন করেন। পরীক্ষাতে তাঁরা মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলের জল নিয়ে একটি কাচের ডিস্কে ব্যবহার করেন। এই জলের ওপর এলইডি লাইটের রশ্মি প্রয়োগ করেন। সাধারণত সূর্যালোকের আলোকতরঙ্গে এই রশ্মি পাওয়া যায়। এরপর দেখেন ঠিক কী পরিমাণে তেল বিক্রিয়াজাত হয়ে জলে দ্রবীভূত হচ্ছে।
পরীক্ষায় খুব তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দেখা যায় আলোকের যেগুলি লম্বা তরঙ্গ সেগুলি তুলনায় ছোটো তরঙ্গগুলির চেয়ে কম তেল দ্রবীভূত করতে পারছে। লম্বা ওয়েভলেন্থ গুলি জলের তরঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। এরফলে পৃষ্ঠের তেল গভীর জলের চেয়ে দ্রুত দ্রবীভূত করতে পারে সূর্যালোক। তবে এই বিক্রিয়া ঘটানোর সময় সূর্যালোক উৎপাদিত যৌগগুলি সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রে কী প্রভাব ফেলেন তা এখনো অজানাই।