হাইড্রোজেন জ্বালানি নিয়ে সারা বিশ্ব জুড়ে আগ্রহ উদ্যোগ ক্রমশই বাড়ছে। এটা সঞ্চয় করা যায়, এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো যায়। অপ্রচলিত জ্বালানির বেশ কিছু সুযোগসুবিধে অবশ্যই আছে। কিন্তু যেকোনো নতুন প্রযুক্তির মতোই হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার করার কিছু অপ্রীতিকর পরিণতি আছে। এই বিষয়ে গবেষণা হয়নি বললেই চলে।
নেচার পত্রিকার ক্লাইমেট চেঞ্জ বিভাগে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটা চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, হাইড্রোজেন জ্বালানি উৎপাদন বা পরিবহনের সময় যদি লিক হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশতে থাকে, তাহলে আরেকটা গ্রিনহাউস গ্যাস মিথেন কিন্তু পরিবেশে দীর্ঘদিন থেকে যাবে। মিথেন বাতাসে বেশিক্ষণ থাকে না, কিন্তু এর ক্ষতিকারক ক্ষমতা কার্বন ডাইঅক্সাইডের তুলনায় ২৫গুণ বেশি।
বাতাসে এমনিতে জলীয় বাষ্প আর অক্সিজেনের বিক্রিয়ায় হাইড্রক্সিল মূলক তৈরি হয়। এই মূলকের সাথে অতি দ্রুত যুক্ত হয়ে মিথেন গায়েব হয়ে যায় বায়ুমণ্ডল থেকে। এমন আরও অনেক বিষাক্ত দূষক বায়ুস্তর থেকে বিক্রিয়ার মাধ্যমে দূর করতে পারে বলে হাইড্রক্সিল মূলককে বলা হয় ‘বাতাসের ডিটারজেন্ট’। কিন্তু হাইড্রোজেন লিক হয়ে বাতাসে মিশতে শুরু করলে বিপদ। সেক্ষেত্রে হাইড্রোজেনের সাথে হাইড্রক্সিল মূলকের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জল উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ ঐ বাড়তি হাইড্রোজেন বাতাসের ডিটারজেন্টকে খরচ করে ফেলে। ফলে মিথেন সহ অন্যান্য দূষক গ্যাসগুলো বায়ুমণ্ডলে বেশি সময় ধরে টিকে থাকে। গ্রিনহাউস প্রভাবটাও বাড়তে থাকে।
প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত দ্য হাই মেডোজ এনভায়রনমেন্টাল ইন্সটিটিউটে কর্মরত ডঃ ম্যাটেও বারট্যাগনি ছিলেন মুখ্য গবেষক। তিনি সতর্ক করছেন, হাইড্রোজেনকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে প্রয়োজনীয় সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে; নইলে আগামী বছরগুলোতে বাতাসে মিথেনের ভাণ্ডার ক্রমে বাড়বে।