মায়ের পাশে শুয়ে আছে সপ্তাখানেকের শিশু সন্তান এবং না ফোটা ছানারা ডিমের মধ্যেই। শুয়ে আছে প্রায় ১০ কোটি বছর ধরে। গত ১৫ই সেপ্টেম্বর এমনই মাকড়সার ফসিলের রিপোর্ট করেছেন লরেন্সের ক্যানাস বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবাশ্মবিদ পল সেলডেন। এটিই মাকড়সার ক্ষেত্রে মায়ের সন্তান রক্ষণাবেক্ষণের সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন। মা মাকড়সা এবং তার না জন্মানো বাচ্ছা মিলে এই যে পরিবার একে বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন- লাগোনোমেগোপিডা। বড় বড় জ্বলজ্বলে চোখের জন্যেই এই নাম। সম্ভবত এই প্রজাতির মাকড়সা সন্তান নিয়ে রাতের বেলা গাছেই খাদ্য শিকার করতো। মাতৃত্বকালীন যত্ন যেমন- ডিম ফুটে বাচ্ছা বেরোনো না পর্যন্ত আগলে রাখা আধুনিক মাকড়সাদের মধ্যে সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু অতিপ্রাচীন মাকড়সাদের মধ্যে চার রকম মাকড়সা ছিল যারা ডিম কে আগলে রাখত বাচ্ছা ফুটে না বেরোনো অব্দি। সেলডেন নির্দেশিত অ্যাম্বারের মধ্যে প্রাপ্ত ফসিল মাকড়সা সেই চার প্রজাতির মধ্যে একটি। মাকড়সাদের মধ্যে মাতৃত্বকালীন যত্নের পরিধীও অনেকটাই। যেমন, বাচ্ছাকে প্রথম খাবার দেওয়া, সদ্য বাচ্ছাকে সেবা দেওয়া ইত্যাদি। জীববিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রায় ১৫ কোটি বছর আগে থেকে কিছু মাকড়সা প্রজাতি মাতৃত্বকালীন যত্নের পরিধী বাড়িয়ে তোলে। যেমন এই মাকড়সার ক্ষেত্রে একটি ব্যাপার লক্ষ্য করার মতো। তিনটি অ্যাম্বারের ঝাঁকের মধ্যে প্রায় ডজন খানেক এক সপ্তা বয়সী মাকড়সার ফসিল পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য মাকড়সা কিন্তু একা থাকতেই ভালোবাসে। জন্মের সাত দিন পরেও বাচ্ছাদের বিক্ষিপ্ত না হওয়ার নিদর্শন আসলে মাতৃত্বকালীন যত্নের সমর্থন করে। সেলডেনের কথায়, ফসিলের মধ্যে মাকড়সার মাতৃত্বকালীন যত্নের নিদর্শন এই প্রথম।