২০৫০ সালের মধ্যে ১২ গুণ বেশি মানুষ ভাইরাস ঘটিত মহামারীর কারণে মারা যাবে- সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা

২০৫০ সালের মধ্যে ১২ গুণ বেশি মানুষ ভাইরাস ঘটিত মহামারীর কারণে মারা যাবে- সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা

বাছাই করা খবর- ২০২৩
Posted on ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩

বিএমজি গ্লোবাল হেলথে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণা অনুসারে, গত অর্ধ শতাব্দীতে প্রাণীদের শরীরে বসবাসকারী প্যাথোজেন দ্রুত গতিতে মারাত্মক মহামারী ছড়িয়ে দিয়েছে, সাথে এই বার্তাও বহন করছে যে আগামী বছরগুলোতে এই সংক্রমণ আরও মারাত্মক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বায়োটেক কোম্পানি জিঙ্কগো বায়োওয়ার্কসের তথ্যের বিশ্লেষণ অনুসারে, প্রাণীদের শরীরে বসবাসকারী বা তাদের ওপর নির্ভরশীল চারটি বিধ্বংসী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ১৯৬৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বছরে প্রায় ৫% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মৃত্যুর বার্ষিক হার ৮.৭% বেড়েছে। গবেষকদেরা মতে, শুধুমাত্র এই চারটি রোগের জন্য মৃত্যুর মোট সংখ্যা ২০২০ সালের রেকর্ডের তুলনায় ২০৫০ সালে কমপক্ষে ১২ গুণ বেশি হবে।
বেশিরভাগ ভাইরাস ঘটিত রোগের উৎপত্তি বন্য বা গৃহপালিত প্রাণীর থেকে ঘটে এবং এদের আশ্রয় করেই জীবাণুরা বেঁচে থাকে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই সব প্রাণী নীরবে জীবাণু বহন করে চলে। আজ মানুষের ক্রিয়াকলাপ নাটকীয়ভাবে প্রাণীদের বহন করা জীবাণু ও মানুষের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে, যেমন বন্য আবাসস্থলে মানুষ আজ ঢুকে পড়েছে ফলত তাদের আবাসস্থলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবাস্থলেরও পরিবর্তন ঘটছে। সাম্প্রতিককালের কোভিড ১৯ মহামারী এবং সেইসাথে সম্ভাব্য স্থানীয় রোগগুলো বাদ দিয়ে গবেষকরা মুষ্টিমেয় কিছু প্রাণী-বাহিত ভাইরাসের উপর আলোকপাত করেছেন- সার্স করোনাভাইরাস ১, ফিলোভাইরাস যেমন ইবোলা, মাচুপো ভাইরাস (যা বলিভিয়ান হেমোরেজিক ফিভার সৃষ্টি করে), এবং নিপা ভাইরাস। গবেষকদের কাছে ৭৫টি ঘটনার উদাহরণ রয়েছে যা ২৪টি দেশে বন্য প্রাণীদের থেকে মানুষের জনসংখ্যার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের আবির্ভাব এবং প্রতিটি প্রাদুর্ভাবের তীব্রতার ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে ফিলোভাইরাস সবচেয়ে মারাত্মক ছিল, যেখানে অধ্যয়ন করা সময়ের মধ্যে রিপোর্ট করা ৪০ বার প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ১৫৭০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তুলনায় দেখা গেছে যে ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে মাত্র দুটি প্রাদুর্ভাবে সার্স করোনাভাইরাস ১-এর ক্ষেত্রে ৯২২ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং মাচুপো ও নিপা ভাইরাসের ক্ষেত্রে ৩৩টি প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ৫২৯ জন মারা গেছে।
যদিও ঘটনাগুলো খণ্ডিত এবং কয়েক দশক ব্যাপী ঘটেছে তবুও গবেষকরা মনে করেন যে এই ধরনের মহামারী কোনো উদ্দ্যেশ্যহীন কার্যকলাপের ফলাফল নয়, এবং এই প্রবণতাটি ক্রমবর্ধমান বলে মনে হচ্ছে। এই গবেষণায় যে প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে তা যদি অব্যাহত থাকে তবে আশা করা যেতে পারে যে এই রোগজীবাণুগুলো ২০২০ সালের তুলনায় ২০৫০ সালে চারগুণ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং ১২ গুণ বেশি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।