প্রায় ২৫০ কোটি বছর আগে কোনও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতই জন্ম দিয়েছে অক্সিজেন অণুর। অস্ট্রেলিয়ার ওই আদিম যুগের আগ্নেয় পাথর থেকেই উঠে এসেছে এই আবিষ্কার। এই বিষ্ময়কর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে চলতি আগস্ট মাসেই ‘ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়, মিচিগান বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরো কিছু প্রতিষ্ঠানের মিলিত গবেষণার ফলাফলে।
গাছের পাতায় থাকা ক্লোরোফিল সূর্যালোকের সাহায্যে ঘটায় সালোকসংশ্লেষ। এই প্রক্রিয়াতেই উৎপন্ন হয় অক্সিজেন। এ আমাদের সকলের জানা প্রক্রিয়া। কিন্তু জড় পৃথিবীতে কেমন করে জীবনের আবির্ভাব হলো হঠাৎ, কীভাবেই বা জীবন বিবর্তিত হল?
অগ্ন্যুৎপাতের ফলে নির্গত হয় লাভা এবং ছাই। ক্রমে তা পাথরে পরিণত হয়। ওই পুষ্টিসমৃদ্ধ পাথর বায়ু ও বৃষ্টির দ্বারা তাড়িত হয়ে নদী তীরবর্তী এলাকাকে ফসফরাস সমৃদ্ধ উর্বর করে তোলে। এবং তার ফলেই সায়ানোব্যাকটেরিয়া ও এককোষী জীবের সৃষ্টি হয়, যারা অক্সিজেন উৎপাদন করে বায়ুমন্ডলে। তাছাড়াও অগ্নেয়গিরিজাত শিলা দ্রবীভূত হয়ে নদী জলে ফসফরাস সরবরাহ করে, যে ফসফরাস অণুজীবদের খাদ্য হিসেবে কাজ করে। ফলে জৈবিক ক্রিয়াকলাপ অগ্রসর হয়, পৃথিবীতে সৃষ্টি হয় জীবনধারা। ফসফরাস জৈবিক ক্রিয়াকলাপকে দীর্ঘ সময় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আজকের দিনে ফসফরাস প্রাচুর্যপূর্ণ এক জৈবিক উপাদান, যা কৃষিজমি উর্বর করে। কিন্তু ২৫০ কোটি বছর আগে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতেই তা সৃষ্টি হত সামান্য পরিমাণে।
সব মিলিয়ে প্রায় ২৪০ কোটি বছর আগে আমাদের পৃথিবীর বায়ুমন্ডল পুরোপুরি ভাবে অক্সিজেনসমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। শুরু হয় জীবনধারার অন্যতম ক্রিয়া ফোটোসিন্থেসিস বা সালোকসংশ্লেষ। আর আস্তে আস্তে পৃথিবী আজকের চেহারা পায়।