সম্প্রতি অন্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্ত ৫০ বছরের কম বয়সী মানুষের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্লিন্ডার ইউনিভার্সিটির দুটি নতুন গবেষণায় বলা হয়েছে যে এই দ্রুত বৃদ্ধি খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে হতে পারে। পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ইয়োহানেস মেলাকু ব্যাখ্যা করেন যে আমাদের যে ধরনের অস্বাস্থ্যকর খারাপ খাবারদাবার পছন্দ তার সঙ্গে অন্ত্রের ক্যান্সারের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত মাংস, ফাস্ট ফুড, পরিশোধিত শস্য, অ্যালকোহল এবং চিনিযুক্ত পানীয় এসবের সঙ্গে খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকির একটি উদ্বেগজনক সম্পর্ক রয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি ৩ জন ক্যান্সার রোগীর মধ্যে ১ জনের মৃত্যুর কারণ খাদ্যনালীর ক্যান্সার। এই ধরনের ক্যান্সার কার্যত খাদ্যনালীর যে কোনো অংশে ঘটতে পারে, গলা থেকে পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, অন্ত্র, বৃহদন্ত্রের শেষ অংশ এমনকি মলদ্বার পর্যন্ত। এপিডেমিওলজিস্ট জেগেই আবেবে এবং সহকর্মীরা খাদ্যাভ্যাস এবং জিআই ক্যান্সারের উপর গবেষণা পর্যালোচনা করে জানিয়েছেন যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সাধারণত ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে। এর জন্য তারা ৯৭,৫৬১ জন ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেন যাদের খাদ্যতালিকায় তন্তু সমৃদ্ধ এবং অসম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার রয়েছে তাদের কোলোরেক্টাল ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কম। গবেষণা অনুসারে এই ক্যান্সার ২০৪০ সালের মধ্যে ১৬ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হবে। গবেষকদের মতে যে হারে খাদ্যনালীর ক্যান্সার বাড়ছে, বিশেষ করে ৫০ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে, স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনা জরুরি। সে জন্য মানুষের পুষ্টিসংক্রান্ত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর খাবার সম্বন্ধে ধারণা থাকা প্রয়োজন। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার যেমন বেরি, সবুজ শাকসবজি, ফল, সবজি, বাদাম, আখরোট, শণের বীজ, হলুদ, আদা, রসুন, টক ফল, চর্বিযুক্ত মাছ এবং রঙিন শাকসবজি সবই প্রদাহ রোধ করে। অন্যদিকে, ময়দা, রেড মিট, মিষ্টি পানীয় এবং পরিশোধিত শর্করা প্রদাহ বাড়িয়ে তোলে। এগুলো আবার ইনসুলিন প্রতিরোধীও করে তোলে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। অধ্যয়নটি এও জানায় যে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার জন্য সারা বিশ্বে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, তাদের জানাতে হবে তাজা ফলমূল এবং শাকসবজি খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে।