অন্ত্রে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া বসবাসের সুবিধে

অন্ত্রে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া বসবাসের সুবিধে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ২১ ডিসেম্বর, ২০২৩

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে একটি নতুন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মানুষের অন্ত্রে বসবাসকারী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে। গবেষকরা দেখেছেন যে এই প্রতিরক্ষামূলক সম্প্রদায় রোগজীবাণুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে ক্ষতিকারক জীবাণুর বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। গবেষণাটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মানুষের অন্ত্র শত শত ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির আবাসস্থল যা সম্মিলিতভাবে অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম নামে পরিচিত। এদের অন্যতম কাজ হল আক্রমণকারী প্যাথোজেন বা রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব থেকে অন্ত্রকে রক্ষা করা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত, এই প্রতিরক্ষামূলক প্রভাবটি কীভাবে আসে এবং অন্যদের তুলনায় নির্দিষ্ট ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া এবং সালমোনেলা এন্টারিকা এই দুটি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেনের বৃদ্ধি হ্রাস করতে ১০০টি ভিন্ন অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার কার্যক্ষমতা পৃথকভাবে এবং একত্রে পরীক্ষা করেছেন। স্বতন্ত্র যেকোন একটি ব্যাকটেরিয়া ওই ক্ষতিকারক জীবাণুর বিস্তারকে রোধ করতে সক্ষম নয় কিন্তু ৫০টি প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া একত্রে ওই ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার কার্য ক্ষমতা ১০০০ গুণ হ্রাস করতে সক্ষম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কেভিন ফস্টার বলেছেন যে এই ফলাফল স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে কলোনি গঠন করা ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং একটি একক স্ট্রেন কেবল তখনই সুরক্ষামূলক হয় যখন অন্যদের সাথে একত্রিত হয়। গবেষকরা দেখেছেন যে কিছু প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া একত্রিত হয়ে সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম যদিও ওই প্রজাতি একা একা সামান্যই সুরক্ষা দিতে পারে। গবেষকরা দেখিয়েছেন যে এই উপকারী ব্যাকটেরিয়া প্যাথোজেনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে রোগজীবাণু বৃদ্ধিতে বাধা দেয়। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির জিনোম মূল্যায়ন করে, তারা দেখেছেন যে সবচেয়ে উপকারী ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিকারক প্যাথোজেনিক প্রজাতির মতো অনুরূপ প্রোটিন দিয়ে গঠিত। গবেষকদের মতে, এই নতুন অন্তর্দৃষ্টি অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম কমিউনিটির বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষতিকারক অন্ত্রের রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য অভিনব কৌশল হিসাবে প্রতিপন্ন হতে পারে। তারা ব্যাখ্যা করছেন কেন অ্যান্টিবায়োটিক চিকিত্সা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম প্রজাতির বৈচিত্র্যকে হ্রাস করে আর ফলস্বরূপ জীবাণু আরও বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। তাই গবেষকদের অনুমান বৈচিত্র্যময় মাইক্রোবায়োম স্বাস্থ্যকে সুরক্ষা দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 1 =