অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি এড়াতে উদ্ভিদ-জাত খাবার খেতে হবে

অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি এড়াতে উদ্ভিদ-জাত খাবার খেতে হবে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ মার্চ, ২০২৪

ঘুমের মধ্যে শ্বাস নিতে না পারার সমস্যাই হল স্লিপ অ্যাপনিয়া। ওজন খুব বেশি হয়ে গেলে ঘুমোনোর সময়ে শ্বাসনালির উপর বেশি চাপ পড়ে ও শ্বাসপ্রক্রিয়া বাধা পায়। এ ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক ও শরীরের কোশে অক্সিজেন সরবরাহ হঠাৎই অনেকটা কমে যায়। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রায়শই জোরে নাক ডাকেন, রাতের বেলা তাদের শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় তাই তারা বেশ কয়েকবার জেগে ওঠেন। তার ফলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে, রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, স্ট্রোক, হৃদরোগ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। ERJ ওপেন রিসার্চ-এ প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, যে সব ব্যক্তিরা স্বাস্থ্যকর, উদ্ভিদজাত খাবার খান অর্থাৎ যাদের খাবারে বেশি পরিমাণে শাকসবজি, ফল, দানা শস্য এবং বাদাম থাকে তাদের অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) হওয়ার সম্ভাবনা কম। অন্যদিকে, যারা অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করে, বা উচ্চমাত্রায় পরিশোধিত শর্করা, চিনিযুক্ত পানীয় এবং বেশি পরিমাণে চিনি ও লবণযুক্ত খাবার গ্রহণ করে, তাদের অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি।
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া শুধু খাবার দাবার নয়, জিনগত কারণ বা আচরণগত কারণ থেকেও হতে পারে। পূর্ববর্তী গবেষণা প্রাথমিকভাবে ক্যালোরি মেপে খাবার খাওয়া, নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকাগত উপাদান এবং ওজন হ্রাসের প্রভাবের উপর আলোকপাত করেছে। কিন্তু কীভাবে খাবার ওএসএ-র ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে সে সম্পর্কে ধারণার ঘাটতি রয়ে গেছে। এই অধ্যয়নের মাধ্যমে সেই ব্যবধান দূর করার চাষ্টা করা হয়েছে। গবেষণায় ১৪,২১০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। দেখা গেছে যে সব ব্যক্তিরা উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন খাদ্য গ্রহণ করে তাদের এই স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা উদ্ভিদজাত খাবার কম খাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় ১৯% কম ছিল। যারা বেশিরভাগ নিরামিষ খাবার খান তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম। আবার যারা অস্বাস্থ্যকর উদ্ভিদজাত খাবার বেশি খান যেমন পরিশোধিত শস্য (পাস্তা, সাদা চাল, এবং প্রক্রিয়াজাত রুটি এবং সিরিয়াল), আলু ভাজা বা আলু চিপস, এবং মিষ্টি পানীয়, তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা ২২% বেশি। এই গবেষণা প্রমাণ করে যে উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন স্বাস্থ্যকর খাদ্য প্রদাহ এবং স্থূলতা হ্রাস করে। অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার- মেদ, প্রদাহ এমনকি শরীরের পেশিকে প্রভাবিত করতে পারে, যা ওএসএ ঝুঁকির সাথে সম্পর্কিত। সুতরাং খাবার খান ভেবে চিন্তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − one =