অভূতপূর্ব অতীত ‘উত্তোলন’

অভূতপূর্ব অতীত ‘উত্তোলন’

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ইউরোপিয়ান বিজ্ঞানীরা প্রতিযোগিতায় নেমেছেন, সাথে আরো সাতটি দেশ। হিমায়িত শিলার কত গভীরে পৌঁছানো যায় ! লিটল ডোম সি, তাদের খননস্থল। প্রতিযোগিতাকালীন, আশাতীতভাবে তারা আবিষ্কার করে ফেললেন প্রায় ১২ লক্ষ বছরের পুরনো বরফ। অনুমান, এটিই পৃথিবীর প্রাচীনতম বরফ। খননস্থল থেকে বরফের যে চাঙরটি তারা আবিষ্কার করেছেন, তা পরপর সংযুক্ত আটটি আইফেল টাওয়ারের চেয়েও লম্বা – ২.৮ কিলোমিটার! এক দশক আগে, এপিকা প্রকল্পের গবেষকরা, ‘ডোম সি’ নামক খননস্থল থেকে, আরেকটি গভীর বরফের চাঙর আবিষ্কার করেছিলেন । তা ৮ লক্ষ বছর আগেকার জলবায়ু, বায়ুমণ্ডলীয় পরিবর্তনের সাথে জড়িত নিবিড় তথ্য দিতে পেরেছিল। গবেষকরা আরো পিছনের দিকে যেতে চেয়েছিলেন। “ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য, অতীতে ফিরে তাকানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ”, প্রফেসর বারবান্তে বলেন। তারপরেই শুরু হয় ‘বিয়ন্ড এপিকা ওল্ডেস্ট আইস’। সদ্য আবিষ্কৃত বরফখন্ডটির ভিতরে আটকে রয়েছে প্রাচীন বাতাসের বুদবুদ। এই বুদবুদই হদিস দিতে পারে, ১২ লক্ষ বছরের জলবায়ু-ইতিহাসের। সময়ের সাথে সাথে, জলবায়ুর অবস্থা, গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমনের মাত্রা এবং তাপমাত্রা কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তার অনুমান দেবে এই বুদবুদ। পরিবহনের সুবিধার্থে, বরফের চাঙরটিকে এক মিটার করে টুকরোয় কাটা হচ্ছে। আন্টার্কটিকা থেকে – ৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় নৌকায় নিয়ে আসা হচ্ছে টুকরোগুলিকে। মিড-প্লিস্টোসিন ট্রানজিশন – শীতল হিম যুগ এবং উষ্ণ আন্ত হিমযুগের মধ্যেকার চক্রের বিস্তৃতি প্রায় ৫৯,০০০বছর। এই সময়কালে মানুষের পূর্বপুরুষরা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। তাদের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছিল হাজারে। এই ‘প্রায় বিলুপ্তির’ ঘটনা কেন ঘটেছিল, জলবায়ুর সঙ্গে এর আদৌ কোনও সম্পর্ক আছে কিনা, তা বিজ্ঞানীরা বুঝতে চান।
‘বিয়ন্ড এপিকা’র গবেষকরা জানিয়েছেন, এই সাফল্য তাদের কাছে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন। এর থেকে তারা ঠিক কী খুঁজে পাবেন? তা এখনই অনুমান করা যায় না। তবে অতীতের অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ অজানা তথ্য যে উঠে আসবে, তা আশা করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 1 =