অমর জেলিফিশ?

অমর জেলিফিশ?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৬ নভেম্বর, ২০২২

ন্যাশানাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসে সোমবারে প্রকাশিত একটা গবেষণায় জেলিফিশের এমন প্রজাতির খোঁজ মিলেছে যারা অমর! ওভিডো বিশ্ববিদ্যালয়ের মারিয়া পাস্কাল-টর্নার, ভিক্টর কেসাদা এবং তাদের সহকর্মীরা টারিটপসিস দোর্নি নামের জেলিফিশের জিনগত কাঠামো আবিষ্কার করেছেন। বিশেষ প্রজাতির এই জেলিফিশ প্রজননের পর আবার লার্ভা দশায় ফিরে যেতে পারে।
অন্যসব জেলিফিশের মতোই টি-দোর্নির জীবনচক্রেও দুটো মাত্র দশা। বংশবৃদ্ধির সময়টা ছাড়া এরা মূলত সমুদ্র সৈকতে কাটায়। এই দশায় মূল লক্ষ্য হল টিকে থাকা। আর পরিস্থিতি অনুকূল হলে অর্থাৎ খাবার পাওয়া গেলে, তারা প্রজননের দিকে যায়।
বয়ঃবৃদ্ধির পদ্ধতিটাকে কয়েক প্রজাতির জেলিফিশ উল্টে দিতে পারে। অর্থাৎ, বয়েস বাড়লে সেটাকে কমিয়ে নিয়ে লার্ভা অবস্থায় ফিরে যাওয়া। কিন্তু বেশিরভাগ জিলফিশের সে ভাগ্য হয় না – একবার জননের পর্যায়ে পৌঁছালে তারা আর লার্ভা হয়ে ফিরতে পারে না। কিন্তু দোর্নির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা অন্য।
ফ্লোরিডার সমুদ্রগবেষণা কেন্দ্রের অধিকর্তা মন্টি গ্রাহামের মতে, দোর্নি প্রজাতির জেলিফিশ প্রায় ১৫-২০ বছর টানা এই ভেলকি দেখাতে পারে। সেই কারণেই এই প্রজাতির নাম অমর জেলিফিশ!
টারিটপসিস রুব্রা বলে জেলিফিশের আরেক প্রজাতি আছে। এদের দোর্নির নিকট আত্মীয় বলা চলে, জিনগত বিচারে অবশ্যই। এই রুব্রা প্রজাতিও কিন্তু প্রজননের পর নিজেদের আর লার্ভা দশায় নিয়ে যেতে পারে না।
গবেষকদল দোর্নির জিনোমে অনেক বেশি বৈচিত্র্য খুঁজে পেয়েছেন। এই আশ্চর্য জিনোমের দৌলতেই ডিএনএ প্রতিলিপি করায় বা মেরামতে সুবিধে হয়। আবার, ক্রোমোজোমের শেষ প্রান্তে যে টেলোমিয়ার থাকে, সেই লেজুড়টাকেও দিব্বি এরা ঠিক রাখতে পারে। এমনকি মানুষেরই বুড়ো বয়সে টেলোমিয়ারের আকার ছোট হয়ে যেতে থাকে। সেখানেও দোর্নি দঁড়।
কিছুটা গর্বের সুরেই গ্রাহাম জানিয়েছেন, এক্ষুনি এই গবেষণার কোনও বাজার মূল্য নেই। অর্থাৎ, চট করে স্কিনকেয়ার ক্রিম হিসেবে জিলিফিশ চাষ তো আর করা চলে না।
তবে অবশ্যই প্রোটিনের কাজকর্মের হাবভাব বুঝতে এটা বেশ কাজের। জানা দরকার কীভাবে মৃত্যুর চোখে ধুলো দিয়ে বেঁচে থাকে অমর এই দোর্নি জেলিফিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 − 3 =