ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) এবং মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি যেমন উদ্বেগ, বিষণ্নতা, বাইপোলার ডিজিজ, সিজোফ্রেনিয়ার প্রভৃতির মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে, এমনটাই বলছে নতুন এক গবেষণায়। ইউনিভার্সিটি অফ অসলো, নরওয়ের বার্গেন ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকদের মতে এই গবেষণার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক এবং আমাদের অন্ত্রের মধ্যে যে জটিল সম্পর্ক রয়েছে তার উপর আলোকপাত করা হয়েছে এবং ইবিএসের চিকিত্সার জন্য আরও সম্ভাবনাময় পথ উন্মোচন করা হয়েছে।
গবেষকরা আইবিএস-এ আক্রান্ত ৫৩,৪০০ জন ব্যক্তি এবং ৪৩৩,২০১ জন ব্যক্তি যারা কন্ট্রল গ্রুপের অন্তর্গত তাদের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন, এবং ডিএনএ সিকোয়েন্সের মধ্যে নির্দিষ্ট জিনের অবস্থান খুঁজেছেন যেটি একটি নির্দিষ্ট রোগের সঙ্গে যুক্ত।
আইবিএস এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিভিন্ন জিনের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়। একে পলিজিনিক বৈশিষ্ট্য বলে। গবেষকরা ৭০ টি একক অবস্থান চিহ্নিত করেছেন যেখানে অবস্থিত জিন আইবিএসের সঙ্গে যুক্ত এবং তাদের মধ্যেই ৭টি জিন সাধারণ উদ্বেগজনিত ব্যাধি, ৩৫টি জিন মেজর ডিপ্রেশনের সাথে, ২৭টি বাইপোলার ডিসঅর্ডারের সাথে এবং ১৫টি জিন সিজোফ্রেনিয়ার সাথে যুক্ত। গবেষকদের মতানুসারে আইবিএস এবং মানসিক রোগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু একই জিনের ভূমিকা রয়েছে যাকে ইংরেজিতে পলিজেনিক ওভারল্যাপ বলে। তারা আরও বলেন যে পেটের রোগের জন্য দায়ী জিনের সঙ্গে এদের খুব বেশি মিল নেই বললেই চলে। মনে করা হয় বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০ জনের মধ্যে ১ জন ব্যক্তি আইবিএস-এ আক্রান্ত। আর এই আইবিএস-এর কারণে রোগীদের শরীরে ক্র্যাম্প, ব্যথা এবং ডায়রিয়াও হতে পারে। যদিও এর কারণগুলো অজানা, কিন্তু মনে করা হয় যে এটি সাধারণত মস্তিষ্কের সঙ্গে অন্ত্রে স্নায়ুর প্রতিক্রিয়ার সাথে যুক্ত। গবেষকরা বলেছেন যে অন্ত্রের প্রদাহের কারণে ব্যাকটেরিয়া অবাঞ্ছিতভাবে রক্ত প্রবেশ করে এবং এই রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে যায় ফলত রোগীর আচরণগত পরিবর্তন হয় এবং বৌদ্ধিক ক্ষমতাও বিঘ্নিত হয় যার ফলে ব্যক্তিটি মানসিক রোগগ্রস্ত হয়ে পড়ে। জিনোম মেডিসিন-এ প্রকাশিত এই গবেষণা আইবিএস-এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখাবে।