আকাশগঙ্গার অর্ধেকটাই নাকি অন্য গ্যালাক্সির অবদান !

আকাশগঙ্গার অর্ধেকটাই নাকি অন্য গ্যালাক্সির অবদান !

Posted on ৯ এপ্রিল, ২০১৯

প্রতিবেশী গ্যালাক্সির গ্যাসসম্ভার থেকে পুষ্ট হয়েই নাকি আমাদের আকাশগঙ্গার আজকের এই রূপ!

পাশের গ্যালাক্সির পদার্থ টেনে নিয়ে বেড়ে ওঠে গ্যালাক্সিরা। রয়াল অ্যাস্ট্রোনমিকাল সোসাইটির গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে গ্যালাক্সির এই অভূতপূর্ব আচরণ। তাদের বিবর্তনের ব্যাপারেও সুলুকসন্ধান চালিয়েছে এই সংস্থা।

মডেল দেখে, এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাকাশবিজ্ঞানী রোমেল ডেভ বলছেন, “গ্যালাক্সিদের কাণ্ডকারখানা যেন নাচের মত”। সেই কসমিক নৃত্যে পরমাণুর আদানপ্রদান হয়। গ্যালাক্সির আকার বড়ো হবে নাকি ছোটো, উপবৃত্তাকার নাকি প্যাঁচানো অথবা গ্যালাক্সিটি শান্ত নাকি বিস্ফোরক – চরিত্রগুলো ঠিক করে দেওয়ায় ভূমিকা থাকতে পারে গ্যালাক্সিদের এই প্রলয়নাচে। “গবেষণার ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ হলেও, বেশ অপ্রত্যাশিত”, মতপ্রকাশ করেছেন আরেক বিজ্ঞানী আন্দ্রে ফোশার।

পরমাণু সংঘর্ষের পর সংযুক্ত হয়ে প্রথমে নক্ষত্র ও পরে গ্যালাক্সির রূপ নিয়েছে; অথবা সুপারনোভা থেকে বিচ্ছুরিত পরমাণুপুঞ্জ আবার সেই গ্যালাক্সিতেই ধাক্কা খেয়ে ক্রমাগত তৈরি করে যাচ্ছে গ্যাসের আস্তরণ – এমনই ধারণা ছিল বিজ্ঞানীদের। কিন্তু এই গবেষণা থেকে আরেকটি সম্ভবনা উঠে আসছে। শক্তিশালী সুপারনোভা বিস্ফোরণে সৃষ্ট পরমাণুগুচ্ছ, গ্যাস আকারে প্রতি সেকেন্ডে কয়েকশো কিলোমিটার গতিবেগে বিচরণ করেছে। তারপর একেকটি গ্যালাক্সির মহাকর্ষক্ষেত্রে প্রবেশ করে মিশেছে সেই গ্যালাক্সির গ্রহ নক্ষত্র ধুলোমেঘ হয়ে। যদিও পরমাণুর এই আদানপ্রদান ধরতে পারা দুষ্কর। কারণ নক্ষত্রের মত এদের আলো নেই।

ফোশার ও তাঁর টিমের তৈরি মডেল ইউনিভার্সে দেখা যায় কীভাবে বিগব্যাং-এর পরে গ্যালাক্সি তৈরি হয়। গ্যাসের পরমাণুগুলিই নক্ষত্র তৈরি করে ও ক্রমে নক্ষত্রের বিস্ফোরণে তারা বেরিয়ে আসে গ্যালাক্সি থেকে।

গবেষণার দাবি, একটি বৃহদাকার গ্যালাক্সির অর্ধেকের বেশিটাই নাকি অন্য গ্যালাক্সির পদার্থে তৈরি। যত বড়ো গ্যালাক্সি, ততই তীব্র তার মহাকর্ষীয় টান। অপেক্ষাকৃত ছোটো গ্যালাক্সি থেকে পদার্থ টেনে নেওয়ার ক্ষমতাও তার তত বেশী।
এক গ্যালাক্সির জিনিস অন্য গ্যালাক্সি শুষে নিচ্ছে। রোমেল ডেভের আশ্চর্য ঠেকছে গ্যাস বিনিময়ের পরিমাণ। গ্যালাক্সির গ্যাসমণ্ডলের ৫০%-ই এই পদ্ধতিতে হয়। আগে যেটা ৫% বলে মনে করা হত।

ইতিমধ্যেই বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সির এই পদার্থ টেনে নেওয়ার ঘটনার প্রমাণ খুঁজতে নেমে পড়েছেন। ফোশারের টিম হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এই ঘটনা চাক্ষুষ করার ব্যাপারে ভাবছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − seven =