আজই জ্যোৎস্না রাতে কোভিড গেছে বনে

আজই জ্যোৎস্না রাতে কোভিড গেছে বনে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১০ মে, ২০২৪

২০২০-২১ এর ঝড়ের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে? সারা পৃথিবীর মানুষ কাতরাচ্ছে কোভিডের কামড়ে। ভীমরুলের মতো চীনের উহান থেকে পৃথিবীযাত্রা শুরু করে ইটালী, ইরান, ইংল্যান্ড, আমেরিকা হয়ে ভারত এবং এশিয়ার দেশগুলো। সব ভাইরাসের পায়ের তলায়। মৃত্যু, শুধু মৃত্যুর সেই দিনগুলোতে বিজ্ঞানীরা হাতড়ে বেড়িয়েছেন মুক্তির পথ- ওষুধ, ভ্যাক্সিন। সাথে সাথে তখন থেকেই বিতর্কিত চর্চা- কোভিড-১৯ এল কোথা থেকে। প্রথম থেকেই যে ধারণা ছিল তা হচ্ছে মনুষ্যেতর প্রাণীর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা এই ভাইরাস যেভাবেই হোক মানুষ পেয়ে তাদেরকে আছড়ে মারছে নতুন বসতিতে মদমত্ত ঐরাবতের মতো। কোনরকমে তার থেকে বেরনোতো গ্যাছে, পৃথিবী এখন আবার তার স্বাভাবিক জীবনে। ইতি উতি করোনা হলেও তার ধার অনেক কম। মৃত্যুও পিছু হটছে। প্রশ্ন হল ভাইরাস গেল কোথায়? বিজ্ঞানীরা থেমে নেই। তারা খুঁজে চলেছেন ভাইরাসের এখনকার বাসস্থান, তার বিবর্তনের নানা ধারাপাতের অঙ্কগুলো।

আশঙ্কা একটাই- আবার কখন বিভীষিকা ফিরে আসে। উত্তেজক খবরও পাওয়া যাচ্ছে- কোভিড-১৯ ভাইরাস এখন মহাফুর্তিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে জঙ্গলে জীব জগতে। পেনসিলভানিয়া রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ-পরিবেশবিদ কার্ট ভ্যান্ডেগ্রিফট্ এবিষয়ে অগ্রণী। তার এবং অন্যান্যদের গবেষণা থেকে খবর আসছে যে নানা জংলী পশু যেমন শিয়াল, ভেড়া, খরগোশ প্রভৃতিতে কোভিড বসত করেছে। সবথেকে জোরদার প্রমাণ পাওয়া গেছে এক বিশেষ প্রজাতির ডোরাকাটা হরিণের মধ্যে। ২০২১ সালে ‘নেচার’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাতেই এর প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছিল। সে সময় এর হা্র ছিল ৩৬ শতাংশ। ভ্যান্ডেগ্রিফটদের ব্যাপকতর নিরীক্ষণে তা এখন প্রায় ৮০ শতাংশ। জীবজগৎ আর মানুষ এ পৃথিবীতে একই ছাদের নীচে থাকে। জীবাণুও তেমন একদিক থেকে আর একদিকে যায় সুযোগ বুঝে। শঙ্কা সেটাই। মায়াবী হরিণের থেকে মানুষে আবার কখন নতুন রূপে এসে পড়ে। অতিমারীর বিরুদ্ধে প্রস্তুতির অংশ এই পর্যবেক্ষন। ২৯শে এপ্রিলের ‘সায়েন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে জন কোহেন এবিষয়ে বিশদে আলোকপাত করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten + 16 =