আন্টার্কটিকায় বরফের নীচে র‍য়েছে বহু আগ্নেয়গিরি

আন্টার্কটিকায় বরফের নীচে র‍য়েছে বহু আগ্নেয়গিরি

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১২ এপ্রিল, ২০২৪

রহস্যে মোড়া এই মহাদেশ আকারে তেমন বড়ো নয়। মোটামুটি হিসেব করে বলা যায়, অস্ট্রেলিয়ার দ্বিগুণ। নাম, আন্টার্কটিকা। যার বেশির ভাগটাই বরফের চাদরে ঢাকা। কী আছে এই বরফের চাদরের নীচে? অনেকেই জানে না এর হিমশীতল আচ্ছাদনের নীচে লুকিয়ে রয়েছে অনেক আগ্নেয়গিরি। মহাদেশের পশ্চিমে বিশাল বরফের চাদরের নীচে রয়েছে ১৩৮টি আগ্নেয়গিরি এবং এটি পৃথিবীর বৃহত্তম আগ্নেয়গিরি অঞ্চল হিসাবে বিবেচিত। ২০১৭ সালে প্রথম এই আগ্নেয়গিরিগুলোর মধ্যে, ৯১টি জিওলজিক্যাল সোসাইটি জার্নালে প্রকাশিত গবেষণার অংশ হিসাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল। তবে কী আন্টার্কটিকার যেকোনো আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে? ভূতত্ত্ববিদদের কাছে এই প্রশ্নটি সহজও আবার কঠিনও এবং তা আগ্নেয়গিরির উপর নির্ভর করে। যদিও এই আগ্নেয়গিরিগুলো নবীন হিসাবে বিবেচিত, তবে বিজ্ঞানীরা “আগ্নেয়গিরি সক্রিয় কিনা তা পার্থক্য করতে অক্ষম ছিলেন”। বর্তমানে, বরফ আচ্ছাদিত মহাদেশে মাত্র দুটি আগ্নেয়গিরি রয়েছে যেগুলোকে সক্রিয় হিসাবে বলা হয়েছে: ডিসেপশন আইল্যান্ড, মূল ভূখণ্ডের উত্তরে একটি ঘোড়ার নালের আকৃতির ভূমি যা দক্ষিণ শেটল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের অংশ; এবং মাউন্ট এরেবাস, মহাদেশের সর্বোচ্চ চূড়া যার উচ্চতা ১২,৪৪৮ ফুট। এটি বিশ্বের দক্ষিণের সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হিসাবে বিবেচিত। গবেষকদের মতে এরেবাসে, কমপক্ষে ১৯৭২ সাল থেকে ক্রমাগত অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে। নাসা আর্থ অবজারভেটরি অনুসারে সেই সময়কাল থেকে, মাউন্ট এরেবাস গ্যাস, বাষ্প এবং পাথরের টুকরো নির্গত করে চলেছে যা সমষ্টিগতভাবে স্ট্রোম্বলিয়ান বিস্ফোরণ নামে পরিচিত। তবে যে কারণে এই আগ্নেয়গিরিটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হল, এর একটি শৃঙ্গের উপর লাভার হ্রদ রয়েছে। জানা গিয়েছে, পর্বতশৃঙ্গের উপর এই ধরনের লাভার হ্রদ সচরাচর চোখে পড়ে না। ওই হ্রদে গলিত পদার্থ রয়েছে। আন্টার্কটিকায় ওই গলিত লাভা কীভাবে তরল অবস্থায় রয়েছে, এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অন্যদিকে, ডিসেপশন দ্বীপ হল একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির ক্যালডেরা, যা শেষবার ১৯৭০ সালে বিস্ফোরিত হয়েছিল। মহাদেশে মাত্র দুটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি থাকা সত্ত্বেও, আন্টার্কটিকায় অনেক জায়গায় ফিউমারোল বা আগ্নেয়গিরির ভেন্ট বা মুখ রয়েছে যা বাতাসে গ্যাস এবং বাষ্প নির্গত করে। যদিও বিজ্ঞানীরা যন্ত্রের সাহায্যে আন্টার্কটিকার আগ্নেয়গিরিগুলোকে ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ করছেন, তবে পরবর্তীতে ঠিক কখন অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে তা ভবিষ্যদ্বাণী করা বেশ চ্যালেঞ্জিং। দুটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি এবং বিভিন্ন ফিউমারোল ছাড়াও, মহাদেশের অন্য কোনো আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হতে পারে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × five =