আফ্রিকার প্যাঙ্গোলিন সংকট

আফ্রিকার প্যাঙ্গোলিন সংকট

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৩ জুন, ২০২৫

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালiয়ের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে যে, আফ্রিকার প্যাঙ্গোলিন
শিকার মূলত মাংসের জন্যই হয়ে থাকে। চীনা ওষুধে ব্যবহারের জন্য তাদের আঁশ রপ্তানির জন্য অপেক্ষাকৃত কম। নাইজেরিয়ার ক্রস রিভার ফরেস্ট এলাকায় প্রায় ৮০০ জন শিকারি ও ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, ৯৮% প্যাঙ্গোলিন শিকারের মূল উদ্দেশ্য মাংস সংগ্রহ। প্রায় ৭১% মাংস শিকারিরা নিজেরা খায়, আর ২৭% স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। আবার, ৭০% আঁশই ফেলে দেওয়া হয়, মাত্র ৩০% বিক্রি হয়।

প্যাঙ্গোলিন বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পাচার হওয়া স্তন্যপায়ী প্রাণী। আফ্রিকায় এর তিনটি প্রজাতি রয়েছে, যেগুলো বিলুপ্তপ্রায়। গবেষণায় বলা হয়, প্রতি বছর শুধু ক্রস রিভার এলাকায় গড়ে ২১,০০০ প্যাঙ্গোলিন মারা পড়ে। শিকারিরা বেশিরভাগ সময় অন্য প্রাণীর সন্ধানে বের হলে সুযোগ বুঝে প্যাঙ্গোলিন ধরেন।এরা বিপদের মুখে পড়ছে মূলত তিনটি কারণে— এদের সহজে ধরা যায়, এরা প্রজননে ধীর এবং অত্যন্ত সুস্বাদু। এছাড়া একটা ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে এদের মাংস ও আঁশ ঔষধ তৈরিতে উপকারী।
গবেষণার প্রধান লেখক ও “প্যাঙ্গোলিনো” সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চার্লস এমোগোর বলেন, প্যাঙ্গোলিনের মাংস নাইজেরিয়ায় সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে পরিচিত, বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের জন্য। প্যাঙ্গোলিনো সংস্থা ইতোমধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব নাইজেরিয়ার চারটি অঞ্চলে প্যাঙ্গোলিন হত্যার বিরুদ্ধে স্থানীয় আইন তৈরিতে সহায়তা করছে। এই আইন মানলে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, বনরুই মাংস স্থানীয় বাজারে আঁশের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি দামে বিক্রি হয়। ফলে আন্তর্জাতিক আঁশ বাজারের চেয়ে স্থানীয় খাদ্য চাহিদা বনরুই শিকারে বেশি প্রভাব ফেলছে।
এই গবেষণা কেবল নাইজেরিয়া নয়, বরং ক্যামেরুন ও গ্যাবনের মত অন্যান্য আফ্রিকান দেশেও মিলযুক্ত একই ধরনের শিকারের ধরণ ও ভোক্তাদের খাদ্যরুচি নিয়েও। গবেষকরা বলছেন, টেকসই সংরক্ষণ কার্যক্রমের জন্য আগে শিকারীদের আসল মতলব টা বোঝা জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + 7 =