উষ্ণতা বাড়ছে। পৃথিবীর তাপমাত্রা ক্রমবর্ধমান। আন্টার্কটিকায় হিমবাহ গলে যাচ্ছে, সেখানে ভাঙন ধরেছে। জলবায়ু বদলের ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর কোণায় কোণায়। বদলে যাচ্ছে আবহাওয়ার মতিগতি। আর এর জের শুধু পারিপার্শ্বিক পরিবেশে নয়, মানুষের মনে শরীরে সমান প্রভাব পড়ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারণে ছত্রাক সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছত্রাকের মধ্যে পরিব্যপ্তি ঘটছে। ফলে তারা হয়ে উঠছে আরও বেশি সংক্রামক। ওষুধও তাদের ঘায়েল করতে পারা যাচ্ছে না, তারা হয়ে উঠছে প্রতিরোধী। বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার জন্য বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, আর এটি তাদের মধ্যে একাটি, সতর্ক করেছেন নানজিং মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির গবেষক জিংজিং হুয়াং এবং সহকর্মীরা। তারা মনে করেন রোগসৃষ্টিকারী ছত্রাকের বিপদ এবং গুরুত্বকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। ছত্রাক সংক্রমণে প্রতি বছর প্রায় ৩৮ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে, যদিও এদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রজাতি আমাদের শরীরের তাপমাত্রার তুলনায় অনেক কম তাপমাত্রা পছন্দ করে। পূর্ববর্তী গবেষণা থেকে জানা যায় যে ছত্রাককে উষ্ণ পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য করলে তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হতে পারে। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক ছত্রাককে চিহ্নিত করেছেন যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রথম প্যাথোজেন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। ছাত্রাকটির নাম ক্যান্ডিডা অরিস। এর মতো অন্যান্য ছত্রাকও যদি তাপ সহনশীল হয়ে ওঠে তবে স্তন্যপায়ী প্রাণীরা ধীরে ধীরে আরও বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকের লোভনীয় আশ্রয়স্থল হয়ে উঠবে। ক্ষতিকারক কিছু ছত্রাক মানুষকে তাদের আঁতুড়ঘর করে তুলবে। বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক যাদের আগে মানুষের মধ্যে দেখা যাত না আজ তারা মানুষের শরীরে ঘর বাঁধছে যেমন রোডোস্পোরিডিওবোলাস, স্ট্রেন এনজে১০৩, স্ট্রেন টিজেড৫৭৯ প্রভৃতি। পৃথিবীর তাপমাত্রা উষ্ণ হওয়ার সাথে সাথে এই রূপগত পরিবর্তন ভবিষ্যতে রোগসৃষ্টিকারী বিপজ্জনক ছত্রাকের সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং আমাদের তৈরি থাকতে হবে। গবেষণাটি নেচার মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে।