আমাদের মগজ কি কোয়ান্টাম কেরামতিতে চলে?

আমাদের মগজ কি কোয়ান্টাম কেরামতিতে চলে?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৫ অক্টোবর, ২০২২

কোয়ান্টাম গণনার দৌড় কদ্দুর তা নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরেই বুঁদ হয়ে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এবার তাঁদের নজর ঘুরেছে আমাদের মস্তিষ্কের দিকে। নতুন গবেষণা বলছে, মানুষের মগজের সাথে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং বিষয়টার সাদৃশ্য নেহাত কম নয়।
ডাবলিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ক্রিস্টিয়ান কার্সকেন্স বলছেন, কোয়ান্টাম অভিকর্ষের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে একটা নতুন ধারণার জন্ম হয়েছে; একটা চেনা কোয়ান্টাম সিস্টেমের সাথে যদি সম্পূর্ণ অজানা কোনও সিস্টেমের যোগসূত্র তৈরি করা যায় তা নিয়ে পরীক্ষা চলছে। যদি ইতিমধ্যেই জানা ঐ সিস্টেম অজানা সিস্টেমের সাথে সংযোগ সৃষ্টি করতে পারে (এন্ট্যাঙ্গেল করতে পারে) তাহলে অজানা সিস্টেমটা অবশ্যই কোয়ান্টাম-ঘটিত।
গবেষণার উদ্দেশ্যেই মস্তিষ্কের তরলের প্রোটনের ঘূর্ণনকে একটা পরিচিত সিস্টেম হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছিল। উল্টোদিকে ছিল বিশেষভাবে তৈরি করা (কাস্টম) ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং বা সংক্ষেপে এমআরআই। যা মস্তিষ্কের রসের মধ্যে প্রোটনের ক্রিয়াকলাপ অনুসন্ধান করবে।
এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে গবেষকরা হৃদস্পন্দনের মতোই কিছু সিগন্যাল দেখতে পেয়েছেন, যেটা একধরণের ইলেক্ট্রোএন্সেফালোগ্রাফি সিগন্যাল। কিছু এই সংকেত সাধারণত এমআরআই-য়ে ধরা পড়ে না। কেন ধরা পড়ল সেই কারণ খুঁজতে গিয়ে বিজ্ঞানীদের দৃঢ় ধারণা এই যে, মগজের ভেতর প্রোটন স্পিন এন্ট্যাঙ্গেল হয়ে ছিল। কার্সকেন্স ব্যাখ্যা করছেন, যদি একমাত্র সম্ভাব্য যুক্তি এনট্যাঙ্গেলমেন্ট হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই মস্তিষ্কের কার্যকলাপের মধ্যে কোয়ান্টাম ধর্ম রয়েছে।
কার্সকেন আরও জানিয়েছেন, শ্রোডিঞ্জার যেখানে প্রাণ বিষয়ে ওনার বিখ্যাত ধারনাগুলো পেশ করেছিলেন সেই লেকচার থিয়েটার থেকে ৫০ মিটার দূরেই নতুন এই পরীক্ষা করা হয়েছে। এই গবেষণা থেকে চেতনার (কন্সিয়াসনেস) মতো জটিলতম বিষয় নিয়েও হয়তো কিছুটা অগ্রসর হতে পারবে বিজ্ঞান।
জার্নাল অফ ফিজিক্স কমিউনিকেশনে বেরিয়েছে এই গবেষণাপত্রটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 6 =