আমাদের মস্তিষ্কও পক্ষপাতিত্ব করে

আমাদের মস্তিষ্কও পক্ষপাতিত্ব করে

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

আমাদের মস্তিস্ক আমাদের পছন্দের মানুষদের কাছ থেকে শিখতে চায় এবং সেভাবেই “প্রোগ্রামড” থাকে। আমরা যাদের অপছন্দ করি তাদের থেকে খুব একটা শিখতে চাই না। এমন কথাই প্রকাশ করেছেন স্নায়ুবিজ্ঞানের গবেষকরা। আমাদের মেমরি বা স্মৃতিশক্তির এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। স্মৃতি আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে এবং বিদ্যমান জ্ঞানের সাথে সাম্প্রতিকতম তথ্য সংযুক্ত করতে সাহায্য করে। আমরা পৃথক অভিজ্ঞতা থেকে যেমন শিখি ঠিক তেমনই ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতাকে সংযুক্ত করে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। এইভাবে, সরাসরি অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও আমরা এমন জিনিস সম্পর্কে অনুমান করতে পারি। একে ইংরেজিতে বলে মেমরি ইন্টিগ্রেশন। শিখনকে এটি দ্রুত এবং নমনীয় করে তোলে। ধরা যাক আপনি একটি পার্কে হাঁটতে গেছেন। সেখানে একটি ব্যক্তির সঙ্গে আপনি একটি কুকুরকে দেখতে পেলেন। আবার, কিছুক্ষণ পরে অন্যত্র আপনি আবার সেই কুকুরটিকে দেখতে পেলেন কিন্তু এবার কুকুরটি একটি মহিলার সাথে ছিল। আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত সংযোগ তৈরি করে যে পুরুষ এবং মহিলা নিশ্চয় দম্পতি, যদিও আপনি তাদের কখনও একসাথে দেখেননি। গবেষকদের মতে এই ধরনের অনুমান আমরা সচরাচর করে থাকি এবং এটি বেশ সহায়ক তবে, অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মস্তিষ্ক ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হয় বা বেছে বেছে কিছু জিনিস মনে রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে মেমরি ইন্টিগ্রেশন, অর্থাৎ, শিখনের সময়কাল জুড়ে তথ্য মনে রাখার এবং সংযোগ করার ক্ষমতা, কোন ব্যক্তি তথ্যগুলো উপস্থাপন করেছে তার দ্বারা প্রভাবিত। দেখা গেছে অংশগ্রহণকারীর পছন্দের ব্যক্তি হলে তথ্য সংযোগ করা সহজ। আর এই ‘পছন্দ’ এবং ‘অপছন্দ’ নির্ভর করে তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, খাদ্যাভ্যাস, প্রিয় খেলাধূলা, শখ এবং সঙ্গীতের মতো বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে। লুন্ড ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক মিকেল জোহানসন বলেছেন, মানুষ বিভিন্নভাবে শেখে এবং তার শেখাটা নির্ভর করছে সেই শিখন উৎসের ওপর। এই গবেষণা দেখায় আমাদের স্মৃতিশক্তি এই প্রক্রিয়াটিকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। মিকেলের মতে তথ্য সম্পূর্ণরূপে নিরপেক্ষ থাকা সত্ত্বেও আমরা বিবেচনা করি কে সেই তথ্যটি উপস্থাপন করছে আর তারপর ভিন্ন ভিন্নভাবে আমরা তথ্য একত্রিত করি। বাস্তব জীবনে, যেখানে তথ্য প্রায়ই শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, এই প্রভাবগুলো আরও বেশি করে ফুটে ওঠে।