আমেরিকানদের মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত করছে সিসা

আমেরিকানদের মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত করছে সিসা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

প্রকৃতি এবং মানুষের পক্ষে সিসা অত্যন্ত ক্ষতিকারক একটি রাসায়নিক। নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি সিসা শরীরে ঢুকলে রক্তচাপ বৃদ্ধি, হজমের গোলমাল, কিডনি, মাংসপেশি, স্নায়ু এবং হাড়ের দুরারোগ্য ব্যাধি হতে পারে। কিছু গবেষণার তথ্য অনুসারে, শিশু এবং বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে কম পরিমাণের সিসাও তুলনায় বেশি ক্ষতি করতে পারে। আবার অন্তঃসত্ত্বা মহিলা যদি সিসার দূষণের শিকার হয় তবে তা গর্ভস্থ সন্তানের বিকাশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ১৯২৩ সালে, গাড়ির ইঞ্জিন ভালো ও সচল রাখতে প্রথম পেট্রোলে সিসা মেশানো হয়। বলা যায় গাড়ির ইঞ্জিনের সুরক্ষার মূল্য দিতে হচ্ছে মানুষের স্বাস্থ্যের মাধ্যমে। এক নতুন গবেষণায় জানানো হয়েছে শৈশবকালে সিসাযুক্ত গ্যাসের সংস্পর্শে এলে তা মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাবিত করে। মানুষ আরও বেশি হতাশাগ্রস্ত, উদ্বিগ্ন এবং অমনোযোগী বা অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। অনুমান করা হচ্ছে শৈশবে সিসার সংস্পর্শে আসার ফলে গত ৭৫ বছরে প্রায় ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ মানসিক ব্যাধির শিকার হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৬ সালে গাড়ির জন্য সিসাযুক্ত গ্যাস নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু ওই সময়ের আগে অর্থাৎ ১৯৬০ থেকে ১৯৭০-এর মধ্যে যারা জন্মেছিলেন তারা সে সময়ে অনেক বেশি পরিমাণে সিসার সংস্পর্শে আসেন। সিসা, স্নায়ুর জন্য ক্ষতিকারক এবং এটি মস্তিষ্কের কোশ ক্ষয় করে। শরীরে প্রবেশ করার পরে মস্তিষ্কের কার্যকারিতারও পরিবর্তন হতে পারে। মাথায় রাখতে হবে বয়স যাই হোক না কেন সিসার এক্সপোজারের কোনো নিরাপদ স্তর নেই। শৈশবে শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে তাই ছোটো শিশুরা সিসার সংস্পর্শে এলে তাদের বেশি ক্ষতি হবে। যেহেতু পুরোনো আমেরিকান শহরগুলোতে জল ব্যবস্থায় এখনও সিসার পাইপ ব্যবহার করা হয়, তাই এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশান এজেন্সি নির্দেশ জারি করেছে যে শহরগুলোতে ১০ বছরের মধ্যে তা পরিবর্তন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 2 =