আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে ‘স্লথ ফিভার’ নিয়ে সতর্কতা

আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে ‘স্লথ ফিভার’ নিয়ে সতর্কতা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ২৯ আগষ্ট, ২০২৪
‘স্লথ ফিভার’ নিয়ে সতর্কতা

আমেরিকারা ২১ জন পর্যটক কিউবা থেকে ঘুরে এসে অরওহপুস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ‘স্লথ ফিভারে’ ভুগছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটাই প্রথম স্লথ ফিভারের কেস। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-র রিপোর্ট অনুযায়ী আক্রান্ত ব্যক্তিরা মশাবাহী রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তবে তাদের মধ্যে তিনজনের এই অসুখের লক্ষণগুলো ফিরে ফিরে আসছে। মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় অঞ্চলে কোনো কোনো পতঙ্গ এই জীবাণু বহন করে, যার থেকে প্রধানত স্লথ ও অন্যান্য বন্য পশু যেমন বাঁদর, ইঁদুর পাখি আক্রান্ত হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই রোগের সংক্রমণ বড়ো আকার ধারণ না করলেও মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে এই রোগ মাথা চাড়া দিয়েছে। প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশন (পিএএইচও) এই রোগের নজরদারি বাড়াতে বলেছে, কারণ বলিভিয়া, কিউবাতে এটা স্থানীয় রোগের আকার ধারণ করেছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে জলবায়ু পরিবর্তন, অরণ্য নিধন, পরিকল্পনাহীন নগরায়ন রোগ বিস্তারের কারণ। এই রোগের মোকাবিলা করার জন্য সেরকম কোনো ওষুধ নেই।
অরওহপুস ভাইরাস দুটো পতঙ্গ দিয়ে ছড়ায়- মশা ও মিজ নামে এক ধরনের ছোটো মাছি। এই রোগ প্রথম থ্রি-টোড স্লথের মধ্যে দেখা গিয়েছিল, তাই রোগটার এরকম চলিত নাম দেওয়া হয়েছে। মানুষের ক্ষেত্রে এই ভাইরাল সংক্রমণকে ডেঙ্গু জ্বর, চিকুনগুনিয়া, জিকা বা ম্যালেরিয়া বলে ভুল করা হয়। লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে হঠাৎ জ্বর, প্রচণ্ড মাথাব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, বমি, ঠান্ডা লাগা, পেশিতে বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। খুব কম ক্ষেত্রে এই রোগ মারাত্মক হতে পারে। এর আগেও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ৫ লাখ মানুষ, মিজের কামড়ে বা কিউলেক্স কুইনকিউফ্যাসিয়েটাস- এর কামড়ে এই রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা এই রোগের একটা খারাপ প্রভাব ভ্রূণে পড়ে। দক্ষিণ আমেরিকার সদ্যোজাত শিশুরা মাইক্রোসেফালি, অর্থাৎ দুর্বল মস্তিষ্ক নিয়ে জন্মেছে।
সাম্প্রতিক একটা গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় এক ধরনের মিডজ প্রজাতি সংক্রামিত হলে অরওহপুস সংক্রমণ করতে পারে। এই পথে রোগটা একটা নতুন মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করবে। সিডিসি জানিয়েছে, পিএএইচও এর মতো অংশীদারদের সাথে কাজ করে কীভাবে এই রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে এবং কেন বর্তমান প্রাদুর্ভাব হচ্ছে তা আরও ভালভাবে বোঝা যাবে। গর্ভাবস্থায় সম্ভাব্য ঝুঁকির জন্য কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, গর্ভবতী মহিলাদের প্রাদুর্ভাবের সম্মুখীন অঞ্চলে ভ্রমণ করা উচিৎ নয়। আর বাকিদের এসব এলাকায় ভ্রমণের সময় মশার কামড় থেকে সুরক্ষা অপরিহার্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + fifteen =