ইতিহাস গড়ল ভারত

ইতিহাস গড়ল ভারত

বাছাই করা খবর- ২০২৩
Posted on ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩

২৩-শে অগস্ট, বুধবার সন্ধ্যে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে চাঁদের মাটিতে সফলভাবে পা রেখেছে ভারতের চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার বিক্রম। চল্লিশ দিনের এই অভিযান অবশেষে সফল হয়। ভারত আজ চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করা চতুর্থ দেশ এবং চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণকারী প্রথম দেশ।প্রথমে ঠিক ছিল বিক্রমের অবতরণের দু ঘণ্টা পর চাঁদে হাঁটা শুরু করবে রোভারা প্রজ্ঞান। কিন্তু ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণের ফলে ‘মুন ডাস্ট’ বা চাঁদে যে ধুলো উড়েছিল তা থিতিয়ে না পড়া অবধি রোভারকে বের করা সম্ভব হয়নি। বিক্রম যখন চাঁদে নেমেছে তখন সেখানে সবে ভোর হয়েছে। ভোরের আলো ফোটার কিছু পরেই বিক্রমের পেটের কাছে দরজা খুলে ঢালু পথ বেয়ে ধীরে ধীরে নেমে আসে প্রজ্ঞান। সেই তথ্যই জানিয়েছে ইসরো। চাঁদের মাটিতে ঘুরে এই রোভারই কাজ করে। ছয় চাকার রোভার প্রজ্ঞান সেকেন্ডে এক সেন্টিমিটার পথ অতিক্রম করতে সক্ষম ছিল। তার সঙ্গেই ছিল একাধিক যন্ত্রপাতি। সেগুলোর সাহায্যে চাঁদের মাটিতে তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে, তথ্য সংগ্রহ করে, চাঁদের বায়ুমণ্ডল, চন্দ্র পৃষ্ঠের গঠন সম্পর্কে তথ্য একত্রিত করে এবং চাঁদের মাটিতে জলের বা বরফের উপস্থিতিরও সন্ধান করার চেষ্টা করে। অবতরণের কিছুক্ষণ পরে, মহাকাশযানটি চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে তার প্রথম ছবি ও সেই সঙ্গে অবতরণের সময় তোলা কিছু ছবি পাঠায়।
বিক্রম ও প্রজ্ঞানের সব যন্ত্রপাতি চলে সৌরশক্তির মাধ্যমে। সুতরাং চাঁদে যতক্ষণ আলো ছিল ততক্ষণই তাদের প্রাণ ছিল। চাঁদের সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত হতে সময় লাগে পৃথিবীর হিসেবে ১৪ দিন। তাই এই ১৪ দিন পরে ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় বিক্রম ও প্রজ্ঞান। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ১৪ দিনের সকাল কাটানোর পর নামে ১৪ দিনের শীতল রাত্রি যখন তাপমাত্রা নেমে যায় -৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। তাতে চন্দ্রযানের যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মিশনের করণীয় তালিকার শীর্ষে ছিল ভবিষ্যতের চন্দ্র মিশনের প্রস্তুতির জন্য ল্যান্ডার এবং রোভার, প্রজ্ঞানের ক্ষমতা পরীক্ষা করা। চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং তার রাসায়নিক পরিমাপও সংগ্রহ করেছিল প্রজ্ঞান। পরিশেষে মহাকাশ সংস্থা সেপ্টেম্বর মাসে বলে যে রোভারটি তার কাজ সম্পূর্ণ করেছে, তবে সে আর জেগে ওঠেনি বরং ভারতের চন্দ্র দূত হিসাবে চিরকাল সেখানে রয়ে যায়।