ইথিওপিয়ায় ম্যালেরিয়ার জন্যে দায়ী এশীয় মশা

ইথিওপিয়ায় ম্যালেরিয়ার জন্যে দায়ী এশীয় মশা

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৬ মার্চ, ২০২৩

২০২২ সালের শুরুতে ইথিওপিয়ার দিরে-দাওয়া-সুরগেদ শহরে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব হঠাৎই শুরু হয়েছিল। ২৪০০ জনের বেশি মানুষ গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। মশার একটা ক্ষতিকর প্রজাতি আফ্রিকার বাইরে থেকে গিয়ে আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ছে, তখন এমনই ধারণা ছিল বিজ্ঞানীদের।
অ্যানোফিলিস স্টিফেন্সাই নামের মশা সাধারণত ভারতবর্ষে আর পারস্য উপসাগরের কাছাকাছি বেশি দেখা যায়। ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী প্লাসমোডিয়াম পরজীবী এই মশার মাধ্যমেই মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটায়। কিন্তু আফ্রিকাতে এই রোগের মূল বাহক আগে ছিল অ্যানোফিলিস গ্যাম্বিয়া। জিবুতিতে সর্বপ্রথম স্টিফেন্সাই প্রজাতির সন্ধান মিলেছিল ২০১২ সালে। আফ্রিকায় সেটা প্রথম রিপোর্ট। তারপর থেকে ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, নাইজেরিয়া সহ নানা আফ্রিকান দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই প্রজাতির মশা।
চলতি বছরে গোড়ায় ইথিওপিয়ার ঐ শহরে হঠাৎই ম্যালেরিয়ার আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ থেকে একলাফে ২৬০ হয়ে যায়। বিজ্ঞানী তাদেসে ও তাঁর দল তৎক্ষণাৎ গবেষণা শুরু করেন এ নিয়ে।
অ্যানোফিলিস স্টিফেন্সাই যেসব জলাধারে বংশবৃদ্ধি ঘটায়, বেশিরভাগ আক্রান্ত রোগী তার কাছাকাছিই বসবাস করত বলে রিপোর্টে উঠে আসে। এবং বিশেষ করে এইসব জলাধারের আশপাশে বসবাসকারী লোকজনের মধ্যে ম্যালেরিয়ার আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ৩.৪গুন বেশি। কিন্তু প্রশ্নের এখনও বাকি আছে। মূল কারণটা হল আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে হঠাৎ করে শুরু হওয়া নগরায়ন। খুব দ্রুত বাড়িঘর যেখানে হচ্ছে ঘিঞ্জি পরিস্থিতির মধ্যে। অথচ গ্রামের দিকে প্রধানত অ্যানোফিলিস গ্যাম্বিয়া প্রজাতির মশার উপদ্রব দেখা দেয়। তার চাইতে অনেক বেশি সংক্রমণের ক্ষমতা রাখে স্টিফেন্সাই। গবেষকদের মতে, আফ্রিকাতে অবৈজ্ঞানিক নগরসৃষ্টির সাথে সাথে এশিয়ার এই প্রজাতির মশা ছেয়ে ফেলেছে নতুন নতুন জলাধার।