উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্য বিকল্প

উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাদ্য বিকল্প

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবারের উপর নির্ভরতা ৫০% কমিয়ে ফেলে উদ্ভিদ-ভিত্তিক বিকল্প বেছে নিলে ২০৫০ সালের মধ্যে কৃষি এবং ভূমি ব্যবহারের ফলে উৎপন্ন গ্রিনহাউস গ্যাস (GHG) নিঃসরণ ৩১% হ্রাস পেতে পারে এবং বন ও প্রাকৃতিক জমির অবক্ষয় বন্ধ হতে পারে। নেচার কমিউনিকেশনস-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, এর ফলে জলবায়ু এবং জীববৈচিত্র্যের উপর এক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। গবাদি পশুর জন্য ব্যবহৃত জমিতে নতুন করে গাছ লাগালে এই সুবিধা আরও বৃদ্ধি পাবে। অধ্যয়নটি সর্বপ্রথম বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা এবং উদ্ভিদ-ভিত্তিক মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবার ব্যবহারের পরিবেশগত প্রভাবের দিকে নজর দেয়। গবেষণাটি IIASA –এর পরিচালনায় অলায়েন্স অফ বায়োভারসিটি, CIAT এবং USAID-র যৌথ উদ্যোগে করা হয়েছিল যেখানে ইম্পসিবল ফুডস নামক একটি সংস্থা যারা মাংস, উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবার দিয়ে তৈরি করে তাদের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। সংস্থাটি গবেষণার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উদ্ভিদ-ভিত্তিক মাংসের বিকল্প দ্রব্যের জন্য জেনেরিক রেসিপিও সরবরাহ করেছিল।
অ্যালায়েন্স অফ বায়োভারসিটি ইন্টারন্যাশনাল এবং CIAT এবং গুন্ড ইনস্টিটিউটের ইভা উলেনবার্গের মতে উদ্ভিদ থেকে তৈরি করা মাংস শুধুমাত্র একটি অভিনব খাদ্য দ্রব্য নয়, বরং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের লক্ষ্য অর্জনের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু সংক্রান্ত লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। তবে, এই ধরনের পরিবর্তন আনা বেশ চ্যালেঞ্জিং এবং এর জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং নীতিগত হস্তক্ষেপের প্রয়োজন। উদ্ভিদ-ভিত্তিক রেসিপির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রাণীর মাংস যেমন গোরু, শুয়োর বা মুরগির মাংস এবং দুধের জন্য খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন করা হয়েছে। বিদ্যমান খাদ্য উৎপাদন ক্ষমতা এবং বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত দ্রব্যের কথা মাথায় রেখে রেসিপিগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে পুষ্টির দিক থেকে তা মূল প্রাণী থেকে প্রাপ্ত প্রোটিনের সমতুল্য। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ফলে পশুপালন ও তাদের খাবার উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত কৃষি জমিতে নতুন করে গাছ লাগালে পরিবেশও উপকৃত হবে। গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে জনসংখ্যার আকার এবং খাদ্যাভ্যাসে পার্থক্য, অসম কৃষিজ দ্রব্যের উৎপাদনশীলতা এবং কৃষি পণ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কারণে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে এর প্রভাব ভিন্ন হতে পারে। যদিও ফলাফল উদ্ভিদ-ভিত্তিক মাংসের বিকল্পের বর্ধিত ব্যবহারকে সমর্থন করে, গবেষকরা স্বীকার করেন যে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের ক্ষেত্রে গবাদিপশু পালান ক্ষুদ্র ধারকদের জন্য অর্থ উপার্জনের এক গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং এর উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক ভূমিকাও রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − twelve =