সাধারণভাবে প্রভূত জৈবরাসায়নিক উপাদান ও শরীরের যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ছন্দসমতা কোষের মধ্যেকার সাইটোস্কেলেটাল গঠনকে ব্যবহার করে মূল কোষ বিভাজিত করে নতুন কোষ তৈরি করে। কিন্তু চলতি সেপ্টেম্বরে বায়োফিজিকাল জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র জানাচ্ছে এই উচ্চ শারীরবৃত্তীয় প্রযুক্তির বিভাজন প্রক্রিয়ার বহু আগেই কোষবিভাজনের সক্ষমতা তৈরি হয়ে গেছিল। জিন, আরএনএ, এনজাইম, এবং সমস্ত জটিল দেহকোষ গঠনের বহু আগেই সহজ পদ্ধতিতে প্রোটোসেল বিভাজিত হত ও পুনরুৎপাদন ঘটাত।
কীভাবে বিভাজিত হত আদিম কালের প্রোটোসেল?
পৃথিবীতে জীব সৃষ্টির আদিকালে কোষ প্রোটোসেল বিভাজিত হয়ে প্রতিলিপি গঠন করতো উষ্ণতার সাহায্যেই। বস্তুত প্রোটোসেলই জীবজগতের আধুনিক কোষের আদি পূর্বসূরী। প্রোটোসেল বহুস্তরীয় ঝিল্লির মধ্যে গুটিকার মতো বদ্ধ থাকত। যা অনেকটা FUCA (ফার্স্ট ইউনিসেলুলার কমন অ্যানসেস্টর) বা সাধারণ আদিম এককোষীর মতো। প্রোটোসেলের ভেতরের এবং বাইরের তাপমাত্রার তফাতের জন্যেই কোষের মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হতো। তার ফলেই কোষ বিভাজিত হয়ে পুনরুৎপাদিত হত। অবশ্য একথাও ঠিক যে আদি এককোষের মধ্যে ঠিক কী রাসায়নিক উপাদান থাকত তা পরিষ্কার নয় আমাদের কাছে।
ইউনিভারসায়েন্সের গবেষক রোমানি আত্তাল জানাচ্ছেন গবেষণার মূল লক্ষ্য ছিল কোষ বিভাজনের প্রধান চালিকা শক্তি খুঁজে বের করা। আত্তাল এ অনুসন্ধানে ব্রতী হন মূলত ক্যান্সারের কথা মাথায় রেখে। ক্যান্সার চিহ্নিতই হয় অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের দ্বারা। ফলে কোষ বিভাজনের চালিকাশক্তি সন্ধান আর তার পাশাপাশি জীবন সৃষ্টির রহস্য জানাই গবেষণা লক্ষ্যের ভিত্তি।
আত্তাল ঐ আদি কোষবিভাজন প্রক্রিয়া কে মাথায় রেখে একটি সম্ভাব্য মডেলের প্রস্তাব দিয়েছেন। যে বহুস্তরীয় ঝিল্লির মধ্যে কোষের অবস্থান সেই ঝিল্লির সাথে অনু কম্পোজ করতে হবে। এবং এতে কোষের মধ্যেকার তাপমাত্রা পরিমাপ সম্ভব হবে ও কোষবিভাজিত করা যাবে। যেমন ইউক্যারিওটিক কোষের মধ্যে উষ্ণতার তারতম্য মাপার জন্যে ফ্লুরোসেন্ট অনু ব্যবহার করা যেতে পারে।
এই সম্ভাব্য মডেল যদি কার্যকরী হয় তাহলে এর বহুমুখী গুরুত্ব থাকতে পারে বলে আত্তাল মনে করেছেন।