এক পায়ে দাঁড়ানোর সময়সীমা আমাদের স্বাস্থ্যের সূচক

এক পায়ে দাঁড়ানোর সময়সীমা আমাদের স্বাস্থ্যের সূচক

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ১ নভেম্বর, ২০২৪

বয়স পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে? দেখুন তো কতক্ষণ এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। এটা পড়ে হাসবেন না। আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা জানতে এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। যদি আপনি অন্তত ৩০ সেকেন্ড একপায়ের ওপর দাঁড়াতে পারেন, একটু এদিক ওদিক নড়লেও অসুবিধা নেই, আপনার বার্ধক্য সুস্থভাবে আসছে। গবেষণা জানাচ্ছে, মানুষের বয়স হয়ে গেলে তাদের হাঁটার গতি কমা বা পেশিশক্তি কমার আগে তাদের ভারসাম্য নষ্ট হতে থাকে। ভারসাম্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ কারণ, পেশি শক্তি ছাড়াও, এর জন্য দৃষ্টি, কানের ভেস্টিবুলার সিস্টেম এবং মস্তিষ্কের সোমাটোসেন্সরি সিস্টেম থেকে ইনপুট প্রয়োজন। এগুলোর সামঞ্জস্য না থাকলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মায়ো ক্লিনিকের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আসগর রেজাই-এর নেতৃত্বে এই গবেষণা পিএলওএস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৭৭ সালে এক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, যারা নিজের একপায়ে ৫ সেকেন্ডের বেশি দাঁড়াতে পারেন না, তাদের পড়ে গিয়ে চোট পাওয়ার সম্ভাবনা অন্যদের তুলনায় দ্বিগুণ। তাদের শারীরিক দুর্বলতা ও স্নায়ুর অসুবিধাও এতে প্রকাশিত হয়।
এই গবেষণায় নারী পুরুষ নির্বিশেষে ৪০ জন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ, যাদের বয়স পঞ্চাশ বা তার বেশি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সময়ের সাথে সাথে তাদের এক পায়ে দাঁড়ানোর সময় কমতে থাকে। প্রথমে অংশগ্রহণকারীদের চোখ খুলে, দু পাশে হাত রেখে দু পায়ে দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। তারপর তারা চুখ বুজে একই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছিলেন। দুবারই ৩০ সেকেন্ড করে তারা দাঁড়িয়েছিলেন। এরপর তাদের একপায়ে ভর দিয়ে অন্য পা তুলে যতক্ষণ সম্ভব ততক্ষণ দাঁড়াতে বলা হয়েছিল। দুপায়ের ওপরই এই পরীক্ষা করা হয়েছিল। গবেষকরা দেখেছেন প্রধান পায়ের ওপর দাঁড়ানোর সময় প্রতি দশকে ১.৭ সেকেন্ড হারে কমে আর অপ্রধান পায়ে এই সময় ২.২ সেকেন্ড কমতে থাকে। এই পরীক্ষার সবচেয়ে বড়ো বৈশিষ্ট্য হল, এর জন্য কোনো বিশেষজ্ঞ, সরঞ্জাম, মাপার কৌশল, বিশ্লেষণ করার প্রয়োজন পড়েনা। যেকোন মানুষ নিজেই এটা করে দেখতে পারেন, তিনি কতটা সুস্থ।