লম্বা দৌড়ের খেলায় তারাই নাকি শেষপর্যন্ত জিতবে! তারাই নাকি শেষপর্যন্ত কর্মবীরের তকমা পাবে! রোবট মানুষের কর্মকাণ্ডে কতটা ভাগ বসিয়েছে সেটা জাপানে গেলে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। ওই দেশের কারখানাগুলোয় যান, দেখবেন রোবট মাল বইছে! এক জায়গা থেকে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। একটু নামী, দামি রেস্তোরাঁয় খেতে যান, কাউন্টারে রোবট দাঁড়িয়ে রয়েছে, আপনাকে হাতে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য। আপনি ওখাঙ্কার বড় কোনও অফিস বা হাই-রাইজ বাড়িতে যান। দেখবেন উগো-কে। উগো একটি রোবট। পাঁচ ফুট লম্বা। তার পায়ে চাকা লাগানো। মাথায় নীল রঙের টুপি পরানো রয়েছে। নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছে! শুধু অফিস বা মাল্টিপ্লেক্স নয়, টোইও শহরের যে কোনও নামি স্কুলে গেলেও একই দৃশ্য দেখা যাবে। জাপানকে বহুদিনই বলা হয় ‘ল্যান্ড অফ রোবটিক্স’। রোবট বিপ্লব জাপান এনেছিল বছর দশেক আগে। তার জন্য ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিল সরকার।
সেই রোবট বিপ্লব আরও এক ধাপ এগোল জাপানি গবেষকদের হাত ধরে। অদূর ভবিষ্যতে রোবট ঢুকে পড়বে জাপানের গার্হস্থ্য জীবনেও। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একটি রোবট তৈরি করেছেন যার দু’টো হাত নিখুঁতভাবে কলার খোসা ছাড়াচ্ছে! কলার কোনও ক্ষতি না করেই। একটি ভিডিও ছাড়া হয়েছে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। যে ভিডিওয় রোবটের নিপুণভাবে কলার খোসা ছাড়ানো দেখে মুগ্ধ জাপানের মানুষ। তবু, গবেষকরা জানিয়েছেন রোবটটি ৫৭ শতাংশ সফল হয়েছে তার কাজে! তিন মিনিট লেগেহে রোবটের কলার খোসা ছাড়াতে। তিন গবেষক হিচিওল কিম, ইয়োসোইউকি ওহমুরা এবং ইয়াসু কুনিয়োসি জানিয়েছেন, রোবটটিকে ১৩ ঘন্টা ধরে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে এই কাজ শেখানোর জন্য। অন্তত কয়েকশো বার শেখানো হয়েছে কলার খোসা ছাড়ানোর কাজ। কুনিয়োসির আশা, রোবটটি আরও নিপুণভাবে কাজ করতে শিখলে, গার্হস্থ্য জীবনে রোবটের ভূমিকা বাড়বে, আরও কার্যকরী হবে।
জাপানে শ্রমিকের অভাব নতুন সমস্যা নয়। ফুড প্রসেসিং কারখানাগুলোয় এখনও পর্যাপ্ত পরিমাণে শ্রমিক পাওয়া যায় না। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই তিন গবেষকের এরকম রোবট তৈরির ভাবনা। কুনিয়োসিদের রোবট এখনও পরীক্ষামূলক স্তরে রয়েছে। কিন্তু গবেষকদের দাবি, পুরো তৈরি হয়ে গেলে জাপানে বিভিন্ন ফুড প্রসেসিং কারখানাগুলোয় তাদের সৃষ্ট রোবট শ্রমিকের অভাব অনেকটাই পূরণ করে দেবে।