এবার নাসার নজরে শুক্র

এবার নাসার নজরে শুক্র

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা
Posted on ৩ এপ্রিল, ২০২২

মঙ্গলগ্রহের এবার নাসার নজরে শুক্র। অনেকদিন ধরেই শুক্রের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে নাসার বিজ্ঞানীরা। আর এবার সেই গ্রহকেই ধরা গেল অন্যরূপে। ঠিক যেন যমজ পৃথিবী। ওয়াইড-ফিল্ড ইমেজার ব্যবহার করে দৃশ্যমান বর্ণালীর ছপবি দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে এই ছবিগুলি থেকে শুক্রগ্রহের ভূপৃষ্ঠের বিশ্লেষণ, গ্রহের বিবর্তন সম্পর্কে বেশ কিছু বিষয় জানা যাবে।
গবেষণা অনেকদিন ধরে চললেও এমন ছবি সাম্প্রতিক সময়ে ধরা পড়েছে পার্কার প্রোবে। ১৯৯০ সালে ম্যাগেলান নামক নভোযানের মাধ্যমে ওই গ্রহে সর্বশেষ অভিযান চালিয়েছিল নাসা। তবে ওই গ্রহের ভূতাত্ত্বিক গঠন ও জলবায়ু সম্পর্কে জানতে ২০২৮ ও ২০৩০ সালে অন্তত দুটি অভিযান পরিচালনা করবে তারা, এমনটাই নাসা সূত্রের খবর। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানায় যে, পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য কোনও গ্রহ যদি থেকে থাকে তা সৌরমন্ডলের দ্বিতীয় গ্রহ শুক্র।
সাম্প্রতিক সময়ে তোলা শুক্রগ্রহের এই ছবি ও তথ্য জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটারস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ।এই ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে শুক্রগ্রহের ভূপৃষ্ঠ থেকে একটি ক্ষীণ আভা বিচ্ছুরিত হচ্ছে। এইরকম ঘটনা মহাকাশ থেকে তখনই দেখা যায়, যদি সেখানে কোনও মহাদেশীয় অঞ্চল, সমভূমি এবং মালভূমি থেকে থাকে। এটাই এগুলির স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। শুধু তাই নয়, শুক্রের বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের একটি আভাসও ছবিতে পাওয়া গিয়েছে বলে মত।
নাসার হেলিওফিজিক্স ডিভিশনের ডিরেক্টর নিকোলা ফক্স এক বিবৃতিতে বলেছেন, “পার্কার আমাদের প্রত্যাশার থেকেও দারুণ কাজ করছে। নয়া কৌশলের মাধ্যমে অভিনব পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যা শুক্রগ্রহের ওপর গবেষণাকে আরও দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।” বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছেন যে শুক্রগ্রহে রাতের দিকে তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৮৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে মালভূমি ও সমভূমির অস্বস্তি বোঝা যাচ্ছে সেখানে। তবে এবার লক্ষ্য শুক্রের ভূপৃষ্ঠে কী কী খনিজ উপাদান রয়েছে তা নিয়ে।
পৃথিবীর মানুষের কাছে শুকতারা নামেও পরিচিত এই গ্রহটি।শুক্র গ্রহের পরিবেশ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত যা জানা যায় তা হল, সেখানে যে পরিমাণ গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, তাতে জীবনের স্পর্শ পাওয়া সম্ভব নেই। নাসার বিজ্ঞানীরাই জানিয়েছেন যে মঙ্গলের বায়ু কিছুটা এক হলেও শুক্রের বায়বীয় স্তর অনেকটাই ঘন। কীভাবে এই বিবর্তন ঘটেছে, কেন শুক্রগ্রহ আজ বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে এই প্রশ্নগুলির উত্তর পেতেই আগামী অভিযানের দিকে নজর রাখছেন বিজ্ঞানীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × two =