ওজন ঝরানো মানেই উপবাস নয়। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, সময়মতো খাবার খেয়েই ছিপছিপে চেহারা পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদেরা বলেন, রোগা হওয়ার ক্ষেত্রে ঘড়ি ধরে খাবার খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই। আমরা কী খাবো সে কথা ভাবার পাশাপাশি, আমরা কোন সময়ে খাবো তাও বিবেচনা করা প্রয়োজন। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ বিহেভিওরাল নিউট্রিশন অ্যান্ড ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি-তে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, দুটি নির্দিষ্ট অভ্যাস দীর্ঘ সময় ধরে বডি মাস ইনডেক্স (BMI) নিয়ন্ত্রণ করতে পারে- রাতেরবেলা তাড়াতাড়ি খাবার খেয়ে নেওয়া এবং পরদিন সকালে তাড়াতাড়ি জলখাবার খাওয়া। বিএমআই মানে হল, ওজন ও উচ্চতার অনুপাত। বিএমআই যত বেশি হবে, ততই খারাপ। এই গবেষণার নেতৃত্ব দিয়েছে বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ (ISGlobal। গবেষণায় ৭০০০-এর বেশি মানুষ অন্তর্ভুক্ত যাদের বয়স ৪০-৬৫ বছর। ২০১৮ সালে প্রথম অংশগ্রহণকারীরা তাদের ওজন, উচ্চতা, খাবারের সময়, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে প্রশ্নাবলীর উত্তর দিয়েছেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে পাঁচ বছর পর, ২০২৩ সালে, ৩০০০-এরও বেশি অংশগ্রহণকারীরা একটি ফলো-আপ ভিজিট করেছিলেন, যেখানে তাদের আবারও কিছু নতুন প্রশ্নাবলীর উত্তর দিতে হয়। অন্যান্য সাম্প্রতিক গবেষণার সাথে সামঞ্জস্য রেখে, এই গবেষণার ফলাফল পরামর্শ দেয় যে রাতের বেলা দীর্ঘ সময় ধরে উপবাস করা অর্থাৎ রাতের খাবার আগে খেয়ে নেওয়া এবং প্রাতঃরাশ তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। গবেষকদের মতে আগে খাওয়ার ফলে শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ বজায় থাকে, আরও বেশি করে সঞ্চিত শক্তি খরচ হয় এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রিত হয়, যা স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। বিষয়টা অনেকটা ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ জাতীয় খাদ্যাভাসের মতো। তবে এই অধ্যয়নে যা বলা হয়েছে তা হল রাতের খাবার ও প্রাতরাশ দুটোই তাড়াতাড়ি সেরে ফেলতে হবে, তবেই এর উপযোগিতা বোঝা যাবে।