সৌদি আরবের উম জিরসেন লাভা টিউব। একটি দেড় কিলোমিটারের লম্বা টানেল এবং তারপর গুহা। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটের একজন গবেষক ম্যাথিউ স্টুয়ার্ট এবং তাঁর সঙ্গীরা মিলে সেই জিরসেন লাভা টিউবে ঢুকেছিলেন। দেড় কিলোমিটার হেঁটে তাঁরা গুহায় ঢোকার পর দেখলেন গুহাটা ভর্তি হয়ে আছে কঙ্কালের হাড়ে! এত হাড় যে গুণে শেষ করা যাচ্ছে না! শেয়াল, উট, নেকড়ে, বাদুড়, ইঁদুর, ছাগল-এদের সঙ্গে তিনটে মানুষের কঙ্কালের হাড়ও। কিন্তু কে বা কারা রেখে গিয়েছে ওই স্তুপাকৃতি কঙ্কালের হাড়? গবেষণা করে স্টুয়ার্ট জানতে পেরেছেন, ডোরাকাটা হায়নাদের কাজ ওটা। গবেষণা আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে। তার মধ্যে আকর্ষণীয় হল, হাড়ের ওই স্তুপ বানানো হয়েছে প্রায় সাত হাজার বছর ধরে! আরও জানা যাচ্ছে, যে প্রাণীদের কঙ্কালের হাড় ওই গুহায় জমা করেছে ডোরাকাটা হায়নারা, তাদের বয়স সাড়ে চারশ থেকে সাত হাজার বছর অব্দি!
জিরসেন লাভা টিউব নিয়ে আগেও গবেষণা হয়েছে। ২০০৭-এ। ১৯১৭টা হাড় আর দাঁত নিয়ে গবেষণা হয়েছিল তখন। আর সেই সময়েই জানা গিয়েছিল, হাড়ের স্তুপ জমা করেছিল ডোরাকাটা হায়নারাই। প্রথমে ভাবা হয়েছিল, নেকড়ে বা শেয়ালেরও কাজ হতে পারে এটা। কিন্তু গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, একমাত্র ডোরাকাটা হায়নাদেরই স্বভাব হাড় না খেয়ে নিজেদের বাসায় জমিয়ে রাখা। খাবারের অভাব দেখা দিলে তখন নিজেরা এবং বাচ্চাদের খিদে মেটাবে ওই হাড়! আর ডোরাকাটা হায়নাদের ঘাড় শক্তিশালী হয় বলে ওজন বইতে তার অসুবিধা হয় না। যে কারণে, মানুষের কবরস্থানেও হানা দেওয়ার স্বভাব আছে ডোরাকাটা হায়নাদের। ওরা যে মানুষের হাড়ও খোঁজে!