কঠিন তরল বা বাষ্প নয়, তবে জলের কোন দশা এটা?

কঠিন তরল বা বাষ্প নয়, তবে জলের কোন দশা এটা?

বিজ্ঞানভাষ সংবাদদাতা‌
Posted on ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

জল তো জলের মতোই সহজ। বরফ হলে আয়তনে বাড়ে। ফুটে বাষ্প হয় বেশি তাপমাত্রায়। কিন্তু একেবারে ন্যানো মাত্রায় নাটকীয় আচরণ করতে পারে এই সাধারণ জলই। সূক্ষ্ম আণবিক স্তরে জলের নানান অজানা দশা খুঁজে পেলেন গবেষকরা।
জীবদেহের কোষপর্দায় আটকে থাকা জল বা বিভিন্ন ভৌগলিক পরিস্থিতিতে একদম ছোট্ট জায়গায় বন্দী থাকা জলকণা কিন্তু পানীয় জলের মতো সহজ নয়। তার ভাবগতিক একেবারেই আলাদা রকমের। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বাধীন এক গবেষক দল অতুলনীয় দক্ষতার সাথে নিখুঁতভাবে দেখিয়েছেন কীভাবে ন্যানোমাত্রায় অদ্ভুত আচরণ করে থাকে জল।
এক অণু সমান স্তরে জলকণার গতিবিধি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করলেন গবেষকরা। ব্যবহার করা হয়েছিল কম্পিউটার মডেলিং। সন্ধান পাওয়া নানা দশার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হেক্সাটিক আর সুপারআয়নিক ফেজ। হেক্সাটিক দশায় জল না কঠিন না তরলের মতো আচরণ করে থাকে। উচ্চচাপে সৃষ্টি হয় সুপারআয়নিক ফেজ। এই দশায় অসাধারণ মানের পরিবাহীর মতো তার চালচলন। বিদ্যুতের তারের ভেতর দিয়ে ইলেকট্রন যেমন ছোটে, বরফের মধ্যে দিয়ে প্রোটনকে সেইভাবে বয়ে নিয়ে যেতে পারে সুপারআয়নিক জল।
মুখ্য গবেষক ছিলেন ভেঙ্কট কপিল। উনি কেমব্রিজের ইউসুফ হামিদ রসায়ন বিভাগের একজন অধ্যাপক। প্রোফেসর কপিল জানাচ্ছেন, জলের আচরণ সম্বন্ধে মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজাই প্রধান লক্ষ্য ছিল। উনি আরও বলেছেন, নেপচুন বা ইউরেনাস গ্রহের কেন্দ্রে ঐ সুপারআয়নিক দশার খোঁজ কিন্তু আগেও মিলেছে। জলের সুপারআয়নিক দশাকে ঠিকঠাক প্রয়োগ করলে ব্যাটারির কার্যকারিতা বহুগুন বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে এখনই বাণিজ্যিক ভাবনাচিন্তা নেই গবেষকদের।