নেপেন্থিস লোউই – নিম্ন স্তরের কলসি আকৃতির গাছ। মুখটি এতটাই ফেনানো দেখলে কমোডের মুখের মতোই মনে হবে। তবে সম্পূর্ণ আকৃতিটি দেখলে বোঝা যায় সেটির আকার কলসির মতো। মজার ব্যাপার হলো এই গাছ পৃথিবীর একমাত্র গাছ যারা প্রাণীদের মল সংরক্ষণ ও ভক্ষন করে। সত্য সত্যই এই গাছের হলদে- লালচে মুখের ওপর বসে ইঁদুর ইত্যাদি প্রাণীরা মলত্যাগ করে। খুব সহজেই যে গাছের বৈশিষ্ট্য থেকে বলা যায় সেটি আসলে ন্যাচারাল কমোড৷
মালয়েশিয়ার বর্নিও পর্বতচূড়ায় এই বিশেষ ধরণের গাছের দেখা মেলে। জন্মের পর শুরুর দিকে এগাছ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় পিঁপড়া ইত্যাদি খেয়ে বড় হতে থাকে। পরিণত বয়সে এসে গাছের আকার আকৃতিতে অদ্ভুত বদল আসে। মলত্যাগ করার জন্যে ফানেলের ওপরে চওড়া মুখের আকৃতিতে কমোডই মনে হয় যেন। আর ফানেলের নিচে কলসির খোলের মতো অংশ থাকে। কেবল কমোডের মতো দেখতে নয়, পর্বতে বাস করে ইঁদুর প্রজাতির ছোটপ জীবেরা যাতে ঐ ন্যাচারাল কমোডে বসে মল ত্যাগ করে সেজন্যে গাছের গায়ে লেগে থাকে মধু স্বাদ। সেই ফাঁদে পা দিয়ে ইঁদুরেরা গাছের ঐ কলস আকৃতির মধ্যে মল ত্যাগ করে, আর সাথে সাথে কলসের মুখের মধু চেটে খায় – খিদে মেটে ইঁদুরেরও। খাদ্য শৃঙ্খলে এ এক অপার্থিব পরিপূরক ব্যাবস্থা। যেখানে জীব হত্যার প্রয়োজনহীন ভাবেই উভয় জীবের খাদ্যভাব মেটে।
জীববিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী ঐ ইঁদুর জাতীয় প্রাণীদের মল গাছের ৫৭-১০০% নাইট্রোজেনের ঘাটতি পূরণ করে৷ আবার ঐ গাছ এলাকার অন্য সব গাছের থেকে বেশি প্রাণরস ধারণ করে। সেগুলো খেয়ে ইঁদুর জাতীয় প্রাণীরা পুষ্টির চাহিদা মেটায়। এবং ঐ রস হজমের পর মলের সঙ্গে প্রচুর নাইট্রোজেন নির্গত হয়। যা লুফে নেয় কমোড গাছ বা নেপেনথিস লোউই।