অনেকেই দিনের বেশির ভাগ সময়েই দাঁড়িয়ে কাজ করেন। সে বাড়ির হেঁশেলেই হোক বা রাস্তার ট্র্যাফিক সিগন্যালে। সারা দিন ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় বলে পায়ে, কোমরে ব্যথাও হয়। তবে সম্প্রতি ফিনল্যান্ডের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘক্ষণ কর্মস্থলে দাঁড়িয়ে থাকলে রক্তচাপের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। অন্যদিকে, পূর্ববর্তী গবেষণায় আমরা জেনেছি কর্মক্ষেত্রে বসে বেশি সময় ব্যয় করলেও রক্তচাপের উপর প্রভাব পড়ে। তাই গবেষকরা জানাচ্ছেন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, এমন ধরনের ব্যায়াম যাতে কোনও ওজন তোলা ফেলা করতে হয় না। এই ধরনের এরোবিক্স, রক্তচাপ কমানোর জন্য কার্যকর, তবে দৈনন্দিন জীবনে শারীরিক কার্যকলাপও রক্তচাপের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তুর্কু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত ফিনিশ রিটায়ারমেন্ট অ্যান্ড এজিং স্টাডিতে অবসর গ্রহণের বয়সের কাছাকাছি কিছু পৌরসভার কর্মচারীদের উপর পরীক্ষা করা হয়। শারীরিক কাজকর্মের সময়, অবসর সময় এবং ছুটির দিনগুলোতে অ্যাক্সিলোমিটারের সাহায্য তাদের নড়াচড়া ও গতি পরিমাপ করা হয়েছিল। এছাড়াও সারা দিন ব্যাপী প্রতি ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর অংশগ্রহণকারীদের রক্তচাপও পরিমাপ করা হয়। গবেষক জুয়া নোরহা বলেন একবার রক্তচাপ মাপার পরিবর্তে ২৪-ঘন্টা রক্তচাপ পরিমাপ করা গেলে বোঝা যাবে দিন ও রাত জুড়ে রক্তচাপ কীভাবে হার্ট এবং রক্তনালীর উপর চাপ দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে যদি সারা দিন ধরে রক্তচাপ সামান্য বেশি থাকে এবং রাতেও পর্যাপ্ত পরিমাণে তা না কমে তবে রক্তনালীগুলো শক্ত হতে শুরু করে এবং বর্ধিত চাপের সাথে মানিয়ে নিতে হার্টকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। বছরের পর বছর ধরে এই ঘটনা চললে এটি হার্টের রোগের বিকাশ ঘটাতে পারে। হার্ট এবং সংবহনতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। বিশেষ করে, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা রক্তচাপ বাড়াতে পারে কারণ শরীর রক্তনালীকে সংকুচিত করে এবং হৃদপিণ্ডের পাম্পিং ক্ষমতা বাড়িয়ে নিম্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। তাই গবেষকদের মতে দীর্ঘক্ষণ না দাঁড়িয়ে থেকে সময় করে অল্প অল্প বিরতি নেওয়া কার্যকর হতে পারে। সেই বিরতির সময় একটু হাঁটা বা কিছু সময় বসে থাকলে তা শরীরের জন্য ভালো। একটানা বসে না থেকে দাঁড়িয়ে থাকা যেমন ভালো, তেমনই একটানা দাঁড়িয়ে না থেকে একটু হাঁটাহাটি বা ব্যায়াম করাও মন্দ নয়।